জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা: রোববার থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এসএসসি ও সমমানের বোর্ড পরীক্ষা। এজন্য প্রবেশপত্রের বিনিময়ে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। যেসব পরীক্ষার্থী ৮০০ টাকা দিতে পারছে না তাদের প্রবেশপত্র আটকে দেওয়া হচ্ছে। অর্ধেক পরীক্ষার্থী এখনও প্রবেশপত্র হাতে পায়নি।
কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা আব্দুল হামিদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ শাখার পরীক্ষার্থী ২১ এবং কারিগরি শাখার পরীক্ষার্থী ৮৩ জন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিটি প্রবেশপত্রের বিনিময়ে ৮০০ টাকা আদায়ের নির্দেশ দেন। কিন্তু অনেক ছাত্রছাত্রী ৮০০ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে তাদের প্রবেশপত্র আটকে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগীরা।
পরীক্ষার্থী সাগর মিয়া জানায়, শুক্রবার দুপুরের আগে তার প্রবেশপত্রের বিনিময়ে শিক্ষক জাকির হোসেন ৮০০ টাকা নিয়েছেন। তার মতো অনেক ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
সাবেক ইউপি সদস্য কাজিম উদ্দিন খান ও স্থানীয় বাসিন্দা রায়হান উদ্দিন আকন্দ, ফরিদ আকন্দ, জামাল উদ্দিনের তথ্যমতে, প্রবেশপত্রের বিনিময়ে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগ ছাত্রছাত্রীর মুখ থেকে শুনেছেন তাঁরা। এ নিয়ে দুই দিন ধরে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা চলছে।
মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন বকেয়া পাওনাসহ প্রধান শিক্ষক যেভাবে ধার্য করে দিয়েছেন সেভাবেই টাকা আদায় করছি।’
প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার ভাষ্য, সারা বছর ছাত্রছাত্রীরা বেতনসহ বিভিন্ন ফির টাকা দেয় না। পরীক্ষার সময়ই বিভিন্ন বকেয়ার টাকা আদায় করে থাকেন তাঁরা। সামনে এসএসসি ও কারিগরি পরীক্ষা। কারও বকেয়া ৮০০, কারও এক হাজার, কারও আবার ৫০০ টাকা বকেয়া আছে। বকেয়ার টাকা আদায় করা হচ্ছে। প্রবেশপত্রের বিনিময়ে কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। তাঁর দাবি, যারা বকেয়া দিতে পারে না, পরীক্ষার আগে তাদের বাড়িতে প্রবেশপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী জালাল বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও গড়াডোবা আব্দুল হামিদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের দাবি, প্রবেশপত্রের বিনিময়ে কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন বকেয়ার টাকা আদায় করা হচ্ছে প্রবেশপত্র দেওয়ার সময়। এরপরও বিষয়টি যাচাই করা হবে।