,

আরও কদিন পুড়তে হবে খরতাপে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্য বৈশাখে এসে গ্রীষ্মের ফুল তার রূপ মেলে ধরলেও সূর্যের খরতাপে পুড়ছে মানুষ। বাড়ির বাইরে পা রাখাই যেন দায়।

রমজান মাসে রোজা রেখে কর্মমুখী মানুষ পড়েছেন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে। আর খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলাই বাহুল্য।

দুপুরে মালিবাগ মোড়ে ক্লান্ত দেহে দাঁড়িয়ে ছিলেন রিকশাওয়ালা সালাম মিয়া। ঘামে ভিজে গেছে তার শরীর। শার্টের বোতাম যতটা খোলা যায়, ততটা খুলে শরীরে বাতাস লাগানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি।

জীবিকার টানে দিনাজপুর ছেড়ে ঢাকায় আসা সালাম মিয়া বলেন, ‘উপায় তো নাই, রিকশা তো চালাবায় হোবে। না হইলে খাম কী? গরমোতও কষ্ট করছি বাহে।’

বাসে চড়ে মোহাম্মদপুর থেকে রামপুরা এসেছেন অনির্বাণ বিশ্বাস। বাস থেকে যখন নামছিলেন তখন তার পুরো শরীর ঘামে ভেজা। চোখেমুখে রাজ্যের বিরক্তি। মেজাজটাও হয়ে আছে খিটখিটে।

বিরক্ত নিয়ে তিনি বললেন, ‘এক দিকে যানজট, আরেক দিকে গরম। জীবনটা শ্যাষ ভাই।’

গরমে যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা, তখন কোনো সুখবর নেই আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে। তারা বলছে, এই অবস্থা চলবে আরও কয়েক দিন।

গ্রীষ্মের এই সময় গরম পড়ায় কোনো অস্বাভাবিকতা দেখছেন না তারা। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই সময়ে গরম পড়বে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রাটা কমে আসবে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, মঙ্গলবার দেশে সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছে রাজশাহী, পাবনা (ঈশ্বরদী) ও চুয়াডাঙ্গায়। এই তিন জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অবশ্য সে তুলনায় স্বস্তিতে ছিলেন সিলেটবাসী। সেখানে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দিনের সর্বনিম্ন।

রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর। অবশ্য সন্ধ্যা নামার পর তাপমাত্রা কিছুটা কমে এসেছে। দ্য ওয়েদার চ্যানেলে দেখা গেছে, সন্ধ্যা ৭টার পর তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে।

কিন্তু তাতে অবশ্য ইট-কংক্রিটের রাজধানীতে স্বস্তি নামেনি। আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গরম অনুভূত হচ্ছে ৪১ ডিগ্রি সেলিয়াস।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে বর্তমানে তাপদাহ যেমন আছে, আরও কয়েক দিন তেমন থাকবে বলেই জানালেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম।

বিডিনিউজ ১০ ডটকমকে তিনি বলেন, ‘কমপক্ষে আরও তিন দিন এই তাপদাহ থাকবে।’

বৃষ্টির সম্ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামী দুই-তিন দিনে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। আর বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রা কমারও সম্ভাবনা নেই।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সিলেট ছাড়া আজ দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি। ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে সেখানে। আর তাই সিলেটের আবহাওয়া ছিল সহনশীল।

নেত্রকোণায় কিছু বৃষ্টি হলেও সেটাকে হিসাবে আনেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর। দিনের হিসাবে তারা ওই বৃষ্টিপাতকে উল্লেখ করেছে ‘সামান্য’ হিসেবে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি জেলায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

তবে দেশের অন্যান্য স্থানে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে বলেই জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

তাপদাহের সঙ্গে দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। ওই সময় আবহাওয়া পরিস্থিতি কেমন থাকবে জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের সময় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সারা দেশে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’

এই বিভাগের আরও খবর