জেলা প্রতিনিধি, শরিয়তপুর: শরীয়তপুরে পিস হিসেবে কেনা তরমুজ কেজি দরে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। মৌসুমের শেষ দিকে এসে কেজি দরে তরমুজ কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ভোক্তারা। অতিরিক্ত লাভের আশায় খুচরা ব্যবসায়ীরা এ কৌশল নিয়েছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের। এ নিয়ে ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের বচসাও হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, সরাসরি ক্ষেত থেকেও পাইকাররা পিস হিসেবে তরমুজ কিনে আনেন, আবার অনেক চাষি তরমুজ নিয়ে পাইকারদের কাছে আসেন সেক্ষেত্রেও পিস হিসেবেই তরমুজের দাম নির্ধারিত হয়। পিস বা লট হিসেবেই তরমুজের বেচা-বিক্রি চলে আসছে আগে থেকেই। আবার পাইকাররাও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পিস হিসেবেই বিক্রি করেন এসব তরমুজ। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজারে গিয়ে কিভাবে সেটি কেজি দরে বিক্রি করেন এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ভোক্তারা। কিভাবে তারা ভোক্তাদের পকেট কাটছে এসব দেখার কেউ নেই বলে ক্ষোভ ঝাড়ছেন ক্রেতাগণ।
এদিকে, পালং বাজার, আংগারিয়া বাজার, বুড়িরহাট বাজার, ভোজেশ্বর বাজার, ভেদরগঞ্জ বাজার, ডামুড্যা বাজার ঘুরে দেখা গেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করছেন। এ নিয়ে ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের বশচাও হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
শরীয়তপুর শহরের পালং বাজারে তরমুজ কিনতে এসে ফারুক আহমদ বলেন, তিনি যখন কিনবেন তখন পিস হিসেবে আর যখন বিক্রি করবেন তখন কেজি দরে এটা কিভাবে সম্ভব। এসব দেখার কি কেউ নেই। আমারতো অসহায় বাজারে এসেছি যেভাবে বলে সেভাবেই কিনতে হবে। কি পিস আর কি কেজি।
তরমুজের ভেতরের রসালো লাল অংশ যা খাওয়া হয়ে থাকে, সেখানে যে ওজন থাকে তার সমপরিমান ওজন থাকে বাকল বা ছোলাতে। আর ছোলা ফেলে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু যখন তরমুজ কিনছি তখন সেই ফেলে দেওয়া অংশই, ভোগ্য অংশের দামেই কিনতে হচ্ছে ওজন দিয়ে।
জাহাঙ্গীর আলম নামে অপর এক ক্রেতা বলেন, খুচরা বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ীরা বাজার সিন্ডিকেট করছে। যে কারণে পিস হিসেবে কিনে কেজি হিসেবে সব খুচরা ব্যবসায়ীরাই জোট বেধে তরমুজ বিক্রি শুরু করছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, দ্বিগুণ লাভের আশায় পিস হিসেবে তরমুজ কিনে কিজি দরে বিক্রি করছে। এতে ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ ভোক্তারা।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে এক কেজি তরমুজের দাম চলছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বেশি ভালো মানেরগুলো ৬৫ থেকে ৭০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। এতে ৫ কেজির একটি তরমুজের জন্য ক্রেতার গুণতে হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। অথচ এই তরমুজের দাম ১৫০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয় বলে জানিয়েছেন পাইকার ও ক্রেতারা।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনদিপ ঘরাই বলেন, কৃষি পন্য যে ইউনিটে ক্রয় করা হয় সে ইউনিটেই বিক্রয় করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যদি কেউ পিস হিসেবে কিনে কেজি দরে বিক্রি করে তাহলে যাচাই বাছাই স্বাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।