,

হঠাৎ আলোচনায় খালেদ সাইফুল্লাহ

জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদির ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম‍্যান খালেদ সাইফুল্লাহ। হঠাৎ করেই তিনি আলোচনায়। ফতোয়ার আদলে তার দেয়া হুশিয়ারি এখন ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা খালেদ সাইফুল্লাহর আগে তেমন পরিচিতি ছিল না। চরমোনাই পীরভক্ত এ নেতার কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও প্রভাব সামান্য। তবে স্থানীয়ভাবে তিনি জনপ্রিয়। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে তিনি জয়লাভ করেছেন। এরপরই তৎপর নিজ এলাকায় ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠায়।

নিজ এলাকায় বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে উচ্চশব্দে গানবাজনা করলে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা গুণতে হবে বলেও তিনি হুশিয়ারি দিয়েছেন। এরকম সতর্কবার্তা ‘হাফেজ মনিরুল ইসলাম’ নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ‘খালেদ সাইফুল্লাহর নির্দেশনা’ হিসেবে ফেসবুকে প্রচার করছেন। যার প্রতিক্রিয়া-সমালোচনা চলছে দেশে-বিদেশে।

তিনি বলেন, ‘রাতে উচ্চশব্দে গানবাজনা হলে মানুষ ঘুমাতে পারে না। এ জন্য রাতে গানবাজনা না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। মানুষ অভিযোগ দিলে জরিমানা করা হবে। চেয়ারম্যান হিসেবে আমার ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার নিয়ম রয়েছে। আমার ফেসবুক আইডি নেই। কে বা কারা আমার নাম দিয়ে এটি ফেসবুকে চালাচ্ছে। আমি এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের আইনের বিরুদ্ধে আমি যেতে পারি না। আমি বলেছি এক রকম, লোকজন প্রচার করছে অন্য রকম। আমার কথাগুলো কোনো আইন নয়, সতর্কবার্তা ও পরামর্শ। একজন আলেম হিসেবে মা-বোন ও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাছাত্রীদের পর্দার জন্য বোরকা পরে বাইরে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। স্কুলে মোবাইল নিয়ে গেলে পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটবে। এতে স্কুলে যেন শিক্ষার্থীরা মোবাইল নিতে না পারে সে জন্য অভিভাবকদের সতর্ক করার জন্য ওয়াজ-মাহফিলে আমি কথা বলেছি।’

ফেসবুকে প্রচার পাওয়া নির্দেশনার ব্যাপারে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত চলছে। চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলেছি। ফেক আইডি থেকে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।’

‘কোনো অভিভাবক বোরকা ছাড়া মেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন না। যারা পাঠাবেন তাদের তালিকা করব। কী ব্যবস্থা নেই, সেটা পরে দেখবেন। স্কুলে কোনো ছাত্র-ছাত্রী মোবাইল নিতে পারবে না। মোবাইল বাড়িতে চালাবে। অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ এটা খেয়াল রাখবেন।’

এদিকে কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম‍্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী বলেন, ‘চরকাদিরা ইউপি চেয়ারম‍্যান খালেদ সাইফুল্লাহ এ ধরনের কোনো নিদর্শনা দিতে পারেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

কমলনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে, তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।’

এই বিভাগের আরও খবর