,

স্বামী-স্ত্রীর ভাগ্য খুললো ‘ব্যাকায়দা হোটেল’

জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ: নবীর মন্ডল ও আলেকা খাতুন বিয়ে করেছেন প্রায় দুই যুগ আগে। সংসার চালাতে অনেক কাজই করেছেন। কিন্তু কোনো কাজই টেকেনি, আসেনি শান্তি। শেষে উপায়ন্তর না পেয়ে চার বছর আগে শুরু করেছেন ‘ব্যাকায়দা হোটেল’। এতে ভাগ্য ফিরেছে এই দম্পতির। তাদের হোটেলের খাবারের স্বাদ এখন এলাকাজুড়ে।

বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের পাশে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নবীর মন্ডল ও আলেকা খাতুন দম্পতির এই ‘ব্যাকায়দা হোটেল’। তারা এই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। খাবার হোটেলের নাম অদ্ভুত হলেও খাবারের মান অতুলনীয় বলছেন কাস্টমাররা।

সাইবোর্ডে ব্যাকায়দা হোটেল লেখা দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আধুনিক হোটেল বলতে যা বোঝায়, তার কিছুই নেই এখানে। কিন্তু সুলভ মূল্যে নবীর-আলেকার নিজ হাতে তৈরি এ খাবারের স্বাদ নিতে প্রতিদিনই শাহজাদপুর উপজেলার হামিদ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের পাশেই ছোট্ট টিনের ছাপড়া ঘরে ভিড় করেন মানুষ।ব্যতিক্রমী নাম দেখেও অনেকে এখানে আসেন খাবার খেতে।

শাহজাদপুর পৌর নিকাহ্ রেজিস্ট্রার (কাজি) মো. শামসুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ‘বিটিভি’তে প্রচারিত ইত্যাদি অনুষ্ঠানে এই ব্যাকায়দা হোটেলের কথা প্রচার হয়েছিল। তখন থেকে ব্যাকায়দা হোটেলের নাম জানি। আধুনিক যুগে এই হোটেলের নাম সত্যি অবাক করার বিষয়। তাই আজ এই ব্যাকায়দা হোটেলে দুপুরের খাবার খেলাম। খাবারের মান বাড়ির খাবারের মতোই।

টাঙ্গাইলের ট্রাক চালক আল-আমিন বলেন, যখনি শাহজাদপুরে ট্রাকের ট্রিপ নিয়ে আসি। তখনই এখানে সকালের নান্তা ও দুপুরের খাবার খাই। এই হোটেলের খাবার আর বাড়ির খাবারে একই স্বাদ পাই।

হোটেলের নাম ব্যাকায়দা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে আলেকা খাতুন বলেন, প্রায় চার বছর আগে কিছুদিন অন্য জায়গার সব সিএনজি স্টেশন বন্ধ ছিল, শুধু এইটা (আব্দুল হামিদ সিএনজি ফিলিং স্টেশন) খোলা ছিল। তখন গ্যাস নিতে আসা সিএনজি ড্রাইভাদের দীর্ঘ লাইনের কারণে কখনো কখনো ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। সেই সময়ে তাদের পরামর্শে আমি ডাল ভাত, খিচুড়ি রান্না করে খাওয়াতাম। তারা বলতো আমরা ব্যাকায়দায় পড়ে তোমার হোটেলে খাই। তখন থেকে মুখে মুখে আমার হোটেলের নাম হয়ে যায় ‘ব্যাকায়দা হোটেল’।

নবীর মন্ডল বলেন, সাধারণত জনসমাগম এলাকায় খাবার হোটেল হয়। কিন্ত আমি সম্পূর্ণ আলাদা এক প্রকার ফাঁকা জায়গায় খাবার হোটেল দিয়ে তার নাম দিয়েছি ব্যাকায়দা হোটেল। প্রায় ৪ বছর এই ফাঁকা জায়গায় হোটেল দিয়ে ব্যবসা করে আসছি।

হোটেলে ভাত, খিচুড়ি, মাছ, মুরগি, গরুর মাংস ও রুটি প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়। ব্যাকায়দা জায়গায় (ফাঁকা জায়গা) হোটেল হলেও নামের ভিন্নতায় পরিচিতি লাভে ভোজনরসিক লোকের সমাগম হয় এখানে। হোটেল ব্যবসা করে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ভালোই আছেন এই দম্পতি।

এই বিভাগের আরও খবর