বিডিনিউজ ডেস্ক: খুলনায় দুটি সরকারি অফিসের দোতলা ভবনে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে লাগানো হয়েছে ক্যাপসুল লিফট।
বৈশ্বিক মন্দাকালে সরকারি অর্থের এমন ব্যয়কে বিলাসিতা হিসেবেই দেখছেন নানা পেশার মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খুলনা জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের পৃথক দোতলা ভবনে জেলার গুরুত্বপূর্ণ অফিসিয়াল কার্যক্রম চলে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি ক্যাপসুল লিফট লাগানো হয়। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৮ লাখ টাকা। পরের মাস থেকে ২৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে খুলনা জেলা পরিষদ ভবনেও ক্যাপসুল লিফট চালুর প্রক্রিয়া চলছে। এই দুটি লিফট স্থাপনের ব্যয় আসছে খুলনা জেলা পরিষদের রাজস্ব তাহবিল থেকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের লিফটি ব্যবহার করেন শুধু প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা। জেলা পরিষদের ভবনে লিফটের নির্মাণ কাজও শেষ পর্যায়ে।
খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘খুলনার সাবেক জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন তাদের ভবনে একটি লিফট দেয়ার জন্য আমাদের অনুরোধ করেছিলেন। তখন আমরা ১৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প নিয়ে ওই ভবনে লিফট লাগিয়ে দিই।
‘পরে আমাদের জেলা পরিষদের দোতলা ভবনের উপরে অতিরিক্ত দুটি কক্ষ ও একটি সেমিনার কক্ষ নির্মাণ করা হয়। সে সময়ে আমাদের ভবনেও একটি লিফট লাগানোর প্রকল্প নেয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ বয়স্ক মানুষ। এছাড়া অনেক বয়স্ক মানুষ এখানে সেবা নিতে আসেন। তাদের জন্য লিফট বসানো হচ্ছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও লিফট ব্যবহার করবেন। এটা প্রয়োজনের তাগিদে করা হয়েছে, বিলাসিতার কিছু নেই।’
দোতলা ভবনে লিফট নির্মাণের ফলে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো প্রকল্প নিজেরা নিতে পারি না। যা করা হয়েছে, সবই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে হয়েছে।’
এ বিষয়ে বেসরকারি সংস্থা রূপান্তরের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সুতপা বেতজ্ঞ বলেন, ‘এখানে বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নেই। এসব প্রকল্প কিভাবে অনুমোদন পায়? আমাদের স্বচ্ছ্বতা ও জবাবদিহিতা এবং জনসম্পৃক্ত প্রকল্প নেয়ার তাগিদ কম। এ জন্য সবাইকে খুশি রাখার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এরকম প্রকল্প নেয়া মানে দুর্নীতি উসকে দেয়া।’
টিআইবির সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) খুলনার সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ক্যাপসুল লিফটটি এখন শুধু কর্মকর্তাদের জন্য ব্যবহার হচ্ছে। এটা বয়স্কদের জন্য করা হলেও বাস্তবে তা প্রতিফলন হচ্ছে না। এর মধ্যে জেলা পরিষদ ভবনেও ক্যাপসুল লিফট বসানো হচ্ছে। এটাও বয়স্কদের কাজে আসবে না। ব্যবহৃত হবে কর্মকর্তাদের বিলাসে।’
-নিউজবাংলা