,

শ্রদ্ধার ফুলে শহীদদের স্মরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহান স্বাধীনতা দিবসে বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে জাতি। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার ফুলে ভরে গেছে সাভারের স্মৃতিসৌধের বেদি।

করোনা সংক্রমণ কমে আসায় ভোর থেকে স্মৃতিসৌধে ভিড় করেন শ্রদ্ধাবনত হাজারো মানুষ। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে জাতির যে বীর সন্তানেরা জীবন উৎসর্গ করেছেন, কৃতজ্ঞচিত্তে তাদের স্মরণ করছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

ভোরে ৫টা ৫৫ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ফুল দেওয়ার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুল দিয়ে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।

শ্রদ্ধা জানানোর পর রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান বেশ কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়। বেজে ওঠে বিউগলের করুণ সুর।

সরকারপ্রধান হিসেবে শ্রদ্ধা জানানোর পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সভাপতি হিসেবে আরও একবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। দলের জ্যেষ্ঠ ও কেন্দ্রীয় নেতারা নিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।

এরপর তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে ১৪ দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে স্মৃতিসৌধে আসা বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা শ্রদ্ধা জানান।

রাষ্ট্রীয় আয়োজনের পর সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য খুলে দেওয়ার পর স্মৃতিসৌধে নামে জনতার ঢল।

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করতে কাকডাকা ভোর থেকেই বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সাভারে হাজির হন নানা রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ। সবাই বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করেন। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার জয় বাংলা স্লোগান বেশি শোনা গেছে সাভারে আসা লোকজনের মুখে। তাদের ঢলে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।

লাল-সবুজের শাড়ি পড়ে অনেক নারী এসেছেন জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করতে। হাতে ফুল নিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা। এসেছেন অনেক স্কুল শিক্ষার্থীও। এছাড়া পাঞ্জাবি পরে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়সী পুরুষ। সকাল নয়টার মধ্যেই ফুলে ভরে যা স্মৃতিসৌধের বেদি।

রাজধানীর উত্তরা থেকে ভোরেই বাবার সঙ্গে সাভারে যান ছোট্ট শিশু রাইসা মেহরিন। সাত বছর বয়সী মেহরিন বলেন, স্বাধীনতা দিবস হওয়ায় বাবার সাথে ফুল নিয়ে এসেছি। সারাদিন ঘুরে দেখব অনেক আনন্দ করবো।

মেহরিনের মতো অনেক শিশু স্বজনদের সঙ্গে সাতসকালে সাভারে হাজির হয়েছে।

তবে সবাই যে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন বিষয়টি এমন নয়। কেউবা এসেছেন জীবিকার তাগিদে। বাদাম-বুট নিয়ে কেউ সকাল সকাল হাজির হয়েছেন। আবার কেউবা পতাকা বিক্রি করতে এসেছেন।

পতাকা বিক্রি করতে আসা রইস জানান, ‘বীর শহীদদের জন্য আমার শ্রদ্ধা তো আছেই। স্বাধীনতার দিনে সবাই যেন পতাকা হাতে ঘুরতে পারেন সেজন্য পতাকা নিয়ে এসেছি।’

এই বিভাগের আরও খবর