জেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া নবনূর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীকে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা আরিফা খাতুনের বিরুদ্ধে।
গত রবিবার (২১ আগস্ট) সকালে এঘটনা ঘটে। এ সময় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য না পাঠিয়ে মারপিটের ওই ঘটনার বিষয়টি যেন কেউ না জানে সে কারণে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিদ্যালয় হতে আহত ওই শিক্ষার্থীদের বের হতে দেননি তিনি।
পরে বিকাল ৪ টায় বিদ্যালয় ছুটি হলে আহত শিক্ষার্থীদের সদর হাসপাতালে চিকিৎসা ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষিকা আরিফা খাতুনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন রিমি, তামান্না, সামি, ও সূর্য। তারা ওই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
এ ব্যাপারে আহত শিক্ষার্থীরা বলেন, ঘটনার দিন সকাল ৯ টার দিকে আমরা স্কুলে যায়। সকাল ১১ টায় গণিত ক্লাস নিতে আসেন আরিফা ম্যাডাম। কয়েকদিন আগে দেওয়া একটি শীটের ২৪টি প্রশ্ন মুখস্ত বলতে বলেন ম্যাডাম। কিন্তু আমরা বলতে পারিনি। এরপর ম্যাডাম স্কেল দিয়ে আমাদের ৪ জনকে অনেক মেরেছে।
আমরা কান্না করলে তিনি বলেন এই বিষয়টি কাউকে বলবিনা। বাড়ি যেয়ে কাউকে বললে আবার মারবো’। এরপর আমাদের আর স্কুল হতে বের হতে দেননি। ৪ টার সময় স্কুল ছুটি হয়ে গেলে আমরা বাড়িতে যায়। তখন আমাদের আহত অবস্থায় দেখে বাবা-মা আহত হওয়ার কারন জানতে চাইলে আমরা বিষয়টি বলি।
এ ব্যাপারে একাধিক অভিভাবক বলেন, ওই স্কুলের ম্যাডামরা ক্লাস বাদ দিয়ে অধিকাংশ সময় ফ্রি ওয়াইফাই দিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে ব্যস্ত থাকেন। লেখাপড়ার পরিবেশ অনেক খারাপ। এছাড়া আরিফা ম্যাডাম বাচ্চাদের সাথে মোটেও ভাল ব্যবহার করেননা। এর আগেও তিনি একাধিক শিক্ষার্থীকে মেরেছেন। আমরা ওই শিক্ষকের শাস্তি চায়।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষিকা আরিফা খাতুন বলেন, ‘আমি মেরেছি তবে খুব বেশি তাদের লাগেনি। তারপরও যেহেতু মেরেছি সেহেতু তাদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নেবো’।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স, ম, কাইয়ুম বলেন, ‘এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি বলেন, ‘প্রাথমিকের কোন শিক্ষার্থীকে মারপিটের কোন নিয়ম নেই। ওই স্কুলের ৪ শিক্ষার্থীকে মারপিটের বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।