আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আরও শক্তি সঞ্চয়ের মাধ্যমে ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হওয়া ‘তওকত’ আজ সোমবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ভারতের গুজরাট রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ।
সোমবার ভোরে তওকত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। গুজরাটের দিকে ধেয়ে আসা ঝড়টি সোমবার রাতে উপকূলে আঘাত হানার সময় এর গতি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণও বাড়তে পারে অনেকটা।
আরব সাগরে উৎপত্তি হওয়া তকতের প্রভাবে ভারতের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং প্রবল বাতাস বয়ে যাচ্ছে। এতে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বহু গাছ উপড়ে পড়েছে। উপকূলে আঘাত হানার পর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রোববার তওকতের প্রভাবে কর্নাটক, কেরালা, গোয়া রাজ্যের ওপর দিয়ে প্রবল ঝড়ো বাতাস বয়ে যায়, ভারি বৃষ্টি হয় ও জোয়ারের সময় সাগরে প্রবল ঢেউ দেখা দেয়। এই রাজ্যগুলোতে ঘরবাড়ি, রাস্তা ও বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ছয় জনের মৃত্যু হয়।
ঘূর্ণিঝড় থেকে বাঁচাতে গুজরাট উপকূলের নিচু এলাকাগুলো থেকে দেড় লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পোরবন্দর, আমরেলি, জুনাগড়, গির সোমনাথ, ভাবনগরের উপকূল ও আহমেদাবাদের উপকূল এলাকায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
ভারতে করোনার প্রকোপে সবচেয়ে বিপর্যস্ত রাজ্যগুলোর একটি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি যতটা সম্ভব সবাইকে বাড়ির ভেতরে থাকার অনুরোধ করেছেন। তিনি কর্মকর্তাদের হাসপাতাল ও অন্যান্য চিকিত্সাকেন্দ্রগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে প্রতিকূল পরিস্থিতি বিবেচনায় সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মুম্বাই বিমানবন্দর। স্থানীয় সময় সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মুম্বই বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধির কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে মুম্বাইয়ে। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিমানবন্দর। চেন্নাই থেকে মু্ম্বাইগামী উড়োজাহাজকে ঘুরিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সুরাটে। মুম্বাই শহরের পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।
মুম্বাইয়ে ৭৫-৮৫ কিমি গতিতে হাওয়া বইছে। চলছে বৃষ্টি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের মোট ৭ হাজার মৎস্যজীবীদের নৌকা উপকূলে ফিরে এসেছে। এছাড়া ৩০০ বাণিজ্যিক নৌকায় নির্দেশ পাঠিয়ে এই দুই রাজ্যের উপকূলে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।