,

রাজধানীতে ডায়ারিয়ার প্রকোপ

নিজস্ব প্রতিবেদক:  রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা।

গত সাত দিনে রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) হাসপাতালে সাড়ে আট হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এবার ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় ৮০ শতাংশ রোগী বয়স্ক নারী ও পুরুষ। তাঁদের বয়স ৮৬ বছর পর্যন্ত।

মহাখালী আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, (আইসিডিডিআরবি), স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর ভর্তি রেজিস্টার থেকে তথ্য মিলেছে, বেশির ভাগ রোগী বয়স্ক নারী-পুরুষ।

আইসিডিডিআর,বির মিডিয়া ম্যানেজার তারিফ হাসান জানান, গত এক সপ্তাহে আট হাজার ৬১২ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। সবমিলিয়ে গত ১৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ৫৩ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন।

আইসিডিডিআর,বি সূত্রে জানা গেছে, ১ এপ্রিল এক হাজার ২৭৪ জন, ২ এপ্রিল এক হাজার ২৭৪ জন, ৩ এপ্রিল এক হাজার ১৭১ জন, ৪ এপ্রিল এক হাজার ৩৮৩ জন, ৫ এপ্রিল এক হাজার ৩৭৯ জন, ৬ এপ্রিল আরও এক হাজার ৩৭০ জন এবং আজ (৭ এপ্রিল) দুপুর দুইটা পর্যন্ত ৭৬১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারিফ হাসান জানান, গত ১৬ মার্চ এক হাজার ৫৭ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরদিনই (১৭ মার্চ) আরও এক হাজার ১৪১ জন রোগী ভর্তি হন। এরপর যথাক্রমে ১৮ মার্চ এক হাজার ১৭৪ জন, ১৯ মার্চ এক হাজার ১৩৫ জন, ২০ মার্চ এক হাজার ১৫৭ জন, ২১ মার্চ এক হাজার ২১৬ জন, ২২ মার্চ এক হাজার ২৭২ জন ভর্তি হন।

আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভর্তি হওয়া ৭৬১ জন রোগীর মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী রোগী পাওয়া গেছে মাত্র ৯ জন। ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা বলছেন, এবার ডায়রিয়া রোগের বিশেষ দুটি লক্ষণ হচ্ছে—ডায়রিয়া শুরু হয়েছে আগে আর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অন্য বছরের চেয়ে বেশি। এ দুটি লক্ষণের সঙ্গে বয়স্ক নারী-পুরুষদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিও স্পষ্ট।

এদিকে সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দুপুর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় কাছাকাছি সময়ে তিনজন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে স্বজনরা। এর মধ্যে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে আসা সালামত উল্লাহর বয়স ৪৩ বছর, হাজারীবাগ থেকে আসা শিবেন বর্মণের বয়স ৫৬ বছর এবং রাজধানীর কদমতলী এলাকা থেকে আসা লায়লা বেগমের বয়স ৬০ বছর।

ওই হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের রোগী ভর্তির রেজিস্টারে দেখা যায়, গত ২১ মার্চ চিকিৎসাসেবা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন কামাল মিয়া (৫৮), ২৩ মার্চ হাসপাতাল ছেড়েছেন কোকিলা বেগম (৪৯)। ১৬ মার্চ থেকে গতকাল ৭ এপ্রিল বিকেল পর্যন্ত যেসব রোগী ভর্তি হয়েছে, তাদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা খুব কম। মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নবম তলায় ডায়রিয়া ও মেডিসিন বিভাগে ভর্তি ডায়রিয়া রোগীর তালিকায় দেখা যায় প্রায় সব রোগী বয়স্ক।

এই বিভাগের আরও খবর