জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে; যা মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। কনকনে ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে এ জেলার জনজীবন।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. রকিবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। যা এই মৌসুমে জেলার এবং দেশেরও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকেই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল চুয়াডাঙ্গার আকাশ। সঙ্গে তীব্র শীত অনুভূত হওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এই বৈরী আবহাওয়ায়ও প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ঘরের বাইরে আসতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে। বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাটবাজারের শ্রমিক ও কৃষি শ্রমিকদের।
আবহাওয়া কর্মকর্তা রকিবুল বলেন, “এ অবস্থা এখন অব্যাহত থাকতে পারে। কয়েকদিন পর তাপমাত্রা আরও নিচে নেমে আসতে পারে।”
তীব্র শীতের কারণে নিম্নআয়ের শ্রমিক শ্রেণীর মানুষদের আয়-উপার্জন কমে গেছে। সন্ধ্যার পর শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। একইভাবে সকালের দিকে শহরে মানুষের আনাগোনা কম থাকছে। ভ্যান ও রিকশা চালকরা কাঙ্খিত যাত্রী পাচ্ছেন না।
কৃষি শ্রমিকরাও পড়েছেন বিপাকে। এখন কৃষির ভরা মৌসুম। মাঠে মাঠে সবজি, বোরো ধানের বীজতলা, আলুসহ অন্য আরো অনেক ফসল। এসব ফসলের পরিচর্যার জন্য কৃষি শ্রমিকদের খুব সকালেই কাজের জন্য মাঠে আসতে হয়। শীতের কষ্ট মেনে নিয়েই মাঠে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।
সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “দেরি করে মাঠে আসলে সময়মত কাজ শেষ করা যায় না। এজন্য খুব সকাল সকাল মাঠে আসতে হয়। কিন্তু শীতর কারণে সেটা করা যাচ্ছে না। শীতে মাঠে আসতে গেলেও কষ্ট। ধানের বীজতলা বড় হচ্ছে।
“মাঠে এসে বীজতলায় জমে থাকা পানি ফেলে দিতে হয়। তা না হলে বীজতলার ক্ষতি হবে। এ কাজটিও করতে হয় খুব সকালে এসে।”
সদর উপজেলার হুচুকপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক আসাদুল হক বলেন, “এখন খুব বেশি শীত। ফলে সকাল বেলা তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। আয়-রোজগারও কমে গেছে।”
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগের প্রকোপও বেড়েছে। বর্হিবিভাগে রোগির চাপ বেশি। বেশিরভাগই ঠান্ডা-সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, শীতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। হাসপাতালের বর্হিবিভাগেও রোগির চাপ বেশি। আবহাওয়ার এই সময়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের যাতে কোনোভাবে ঠান্ডা না লাগে সেদিকে নজর রাখতে হবে। শীতের তীব্রতা বাড়লে বয়স্কদের ঘরের বাইরে না আসায় ভাল।