,

মাইকিং করে কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিল্পাঞ্চল সাভারের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে টার্গেট করে সক্রিয় বেশ কিছু প্রতারকচক্র। সহজ সরল মানুষকে টার্গেট করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় হল তাদের লক্ষ্য। এমন একটি প্রতারক চক্র হলো সাভারের রুপসী বাংলা ফাউন্ডেশন।

ফাউন্ডেশনটি মাইকিং করে সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা বলে ১৩৬ ব্যাচে ৪ হাজার নারীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে খুঁটি পুঁতে বসেন প্রতারক চক্রের মুলহোতা ডা. সাজিদ হাসান। প্রথমে ডাক্তার তার পর ফাউন্ডেশনের ব্যবসাসহ আইপি টিভির ব্যবসা। সাভারে তিনি অনলাইনে ও মুঠোফোনে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার কৌশল অবলম্বন করে আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেন। পরে সেলাই প্রশিক্ষণের নামে হাতিয়ে নেন কোটি টাকা।

অভিযোগ আছে ডা. সাজিদ করোনা মহামারির সুযোগে অবাধে চালিয়েছেন এই প্রতারণার ব্যবসা। তিনি ডাক্তার পরিচয়ে চিকিৎসা প্রদান করেন তারই ফাউন্ডেশনের সদস্যদের। তবে তিনি তার (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) বিএমডিসি নম্বর দেখাতে পারেননি।

প্রতারণার শিকার লিমা বলেন, মাইকিং আর বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে তিনি এই প্রতারণা করেছেন। এসব বিজ্ঞাপনে ১০০ টাকায় সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা থাকলেও তারা ভর্তি ফির নামে প্রথমেই নিয়েছে দেড় হাজার টাকা। কিস্তিতে ভর্তি সুবিধার নামে নিয়েছে আরও ২০০ টাকা। এক্ষেত্রে শুরুতে নিয়েছে ১ হাজার টাকা। তারা মাইকিং ও বিজ্ঞাপনে ঘোষিত টাকার চেয়ে বেশি টাকা গ্রহণ করে প্রতারণা করেছেন।

একইভাবে প্রতারণার শিকার মিম বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে সেলাই মেশিনের আশায় সেখানে প্রশিক্ষণের জন্য গত ২২ জানুয়ারি দেড় হাজার টাকা দিয়েছি। আমরা ছিলাম ১৩৬তম ব্যাচ। যেখানে প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৯ জন।পরে তারা সবার কাছ থেকে সেলাই মেশিন বাবদ আরও ৫ হাজার করে নিয়েছেন। কিন্তু প্রশিক্ষণের ৯ দিন আমাদের আর শেখানো হয়নি।

তারা প্রথমে ১০০ টাকায় প্রশিক্ষণ করানোর কথা বলে আকৃষ্ট করে। পরে ভর্তির জন্য গেলে কৌশলে সাড়ে ৬ হাজার টাকা নিয়ে নেয় সংগঠনটি। এরপর নাম মাত্র দুই-একদিন প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের হদিস থাকে না। পরে সেলাই মেশিনও নেই, টাকাও নাই। এভাবে কেটে গেছে ১৩৫টি ব্যাচ। এ ঘটনায় টাকা ফেরত না পেয়ে ভুক্তভোগীরা প্রায় ৩০ জন একত্রিত হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

এ বিষয়ে রূপসী বাংলার চেয়ারম্যান সাজিদ হাসান রানা বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে ডাক্তার হিসেবে তার বিএমডিসি নম্বর চাইলে তিনি বলেন, আমি ওই ডাক্তার না, আমি ডিপ্লোমা ডাক্তার। আমাদের এই নম্বর নাই।

এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন ভুক্তভোগী নারীরা। আমরা তদন্ত করে দেখছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাভার উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শিবলী জামান বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি সমাজ সেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধন পাওয়া প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের কোনো কিছুর প্রামাণ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর