,

বড়দিনের জন্য গোপালগঞ্জে প্রস্তুত ১৪৯ গীর্জা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জে খ্রিষ্ট্রান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড় দিনকে সামনে রেখে ১৪৯ টি গীর্জা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। করা হয়েছে আলোকসজ্জা। গীর্জা, খ্রিষ্ট্রান বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে টানানো হয়েছে বড় দিনের স্টার। সাজানো হয়েছে ক্রিসমাসট্রি। গীর্জায় গীর্জায় বড় দিনের প্রার্থনা সঙ্গীতের মহড়া চলেছে। বড় দিনকে সামনে রেখে জেলার উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গীর্জা গুলোতে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বানিয়ারচর ক্যাথলিক গীর্জার ফাদার রিংকু রেজম গমেজ বলেন, ২৫ ডিসেম্বর যীশু খ্রিষ্টের জম্ম দিন। দিনটি আমাদের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে আনন্দের দিন। যীশু খ্রিষ্টের জম্মের মাহেন্দ্রক্ষনের প্রথম প্রহরে ২৪ ডিসেম্বর রাত ১২ টা ১ মিনিটে কেক কেটে ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে জেলার ১৪৯ টি গীর্জায় বড় দিনের অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হবে।

২৫ ডিসেম্বর সকালে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ প্রার্থনা। আয়োজন করা হবে উৎসব ভোজের। ভাতৃত্বের বন্ধনের এ উৎসবে মিলিত হবেন সব সম্প্রদায়ের মানুষ। ১ ডিসেম্বর থেকে গোপালগঞ্জে বড় দিনের ক্ষনগননা শুরু হয়েছে। এ দিন দুপুরে বড়দিন উপলক্ষ্যে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন মন্ডলীর পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জ শহরে বর্নাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গীর্জা গুলোতে প্রাক্ বড়দিন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যীশু খ্রিষ্টের আগমনী বার্তাকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন মন্ডলীর পক্ষ থেকে নগর কীর্ত্তন করা হচ্ছে। বড় দিনের বিশেষ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু করা হবে। তারপর ৭ দিনব্যাপী মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামে চলবে বড়দিনের মেলা।

গোপালগঞ্জ খ্রিষ্টান ফেলোশিপের সভাপতি রেভা. স্যমুয়েল এস বালা বলেন, জেলার ১৪৯টি গীর্জা বড়দিনের প্রার্থনার জন্য প্রস্তুত। সারা জেলায় উৎসব মুখর পরিবেশে বড়দিন উদযাপিত হবে। তিনি জেলা বাসীকে বড় দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

খ্রিষ্টান শিক্ষার্থী আঁখি মন্ডল বলেন, যীশু খ্রিষ্ট আমাদের পাপের ক্ষমা করতেই পৃথিবীতে আর্বিভূত হয়েছিলেন। আমরা বিশ্বাস করি তিনি আমাদের পাপের ক্ষমা করবেন। ২৫ ডিসেম্বর তাঁর জম্ম দিন। এদিনটি আমাদের কাছে সবচেয়ে পবিত্রতম দিন। তাই যীশু খ্রিষ্টের প্রশংসা, সংগীত, বাইবলে পাঠ ও প্রার্থনা করে আমার তাঁর অশির্বাদ পেতে চেষ্টা করবো। পরিবার পরিজন, স্বজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে মিলিত হব প্রণের আনন্দ উৎসবে। এ উৎসবকে ধারন করে সারা বছর সুন্দর ও সত্যের পথে চলবো।

মুকসুদপুর উপজেলার বানিয়ারচর গ্রামের অভিলাস হীরা বলেন, ‘যীশু খ্রিষ্ট ত্যাগ, ক্ষমা ও প্রেমের মহিমায় বলীয়ান। তাই তাঁর মহান আদর্শকে বুকে ধারন করে পথ চলছি। তাঁর জম্মদিনকে সামনে রেখে আমরা বানিয়ারচর ক্যাথলিক গীর্জায় প্রার্থনা সংগীতের মহড়া দিচ্ছি। প্রভূর কৃপায় আমরা বড় দিনের প্রার্থনায় সুন্দর সুন্দর গান পরিবেশন করতে পারবো। এতে প্রার্থনা সভা আরো সৌন্দর্য মন্ডিত হয়ে উঠবে।’

গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইও (১) দেওয়ান আমিনুল ইসলাম জানিয়েছে, জেলার ৫ উপজেলার ১৪৯ টি গীর্জায় বড়দিন উপলক্ষ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘বড়দিন সবার জীবনে সুখ সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। আমি এ প্রত্যাশা করি। এ উৎসব সবার। আমরা ধর্মীয় বিশুদ্ধতার মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বড়দিন উদযাপন করবো।’

এই বিভাগের আরও খবর