,

বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাসায় ছাত্রীর অনশন

জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী তৌহিদুল ইসলামের বাসায় বিয়ের দাবিতে ৪ দিন থেকে অনশন করছে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী।

তবে কম্পিউটার ল্যাব সহকারী তৌহিদুল সেদিন থেকেই পলাতক। আর অনশনরত শিক্ষার্থীর অভিযোগ বিয়ের প্রলোভনে অনেকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে লম্পট শিক্ষক।

এছাড়াও চাকুরীর কথা বলে ২ লক্ষ টাকাও নিয়েছে মেয়ের বাবার কাছে ওই শিক্ষক এমন অভিযোগ করেছেন মেয়ের বাবা।  অপরদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে ওই শিক্ষার্থী বিয়ের দাবিতে তৌহিদুলের বাড়ীতে অনশন অবস্থায় থাকলেও কোন প্রকার সমাধান না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা।

গত শনিবার ও সোমবার উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল থেকে তারা তৌহিদুলের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করেন।

এছাড়াও তারা তাদের সহপাঠীর সাথে যে অন্যায় হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পযর্ন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষনা দেন। পরে শিক্ষার্থীর একটি প্রতিনিধিদল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবিরের নিকট একটি স্মারকলিপি দেন।

সরেজমিনে কম্পিউটার ল্যাব সহকারী তৌহিদুলের বাসা পৌর শহরের সহোদর গ্রামে গিয়ে অনশনরত ওই শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শিক্ষক তৌহিদুলের সাথে আমার আড়াই বছরের প্রেমের সর্ম্পক। বিভিন্ন কৌশলে আমাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তিনি আমার সাথে একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পক করেছেন। এখন তিনি অন্য জায়গায় বিয়ে করছেন তা জানতে পেরে আমি তার কাছে এর কারণ জানতে চাইলে তিনি আমাকে এড়িয়ে যান। পরে জানতে পারি তিনি আমাকে বাদে, অন্য জায়গায় বিয়ে করার পায়তারা করছেন। এ কারণে আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য গত বৃহস্পতিবার তৌহিদুলের বাড়ীতে অবস্থান নিয়েছি।

ওই শিক্ষার্থী আরো জানায়, তৌহিদুলের পরিবার আমাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমি বের হয়নি, সে আমাকে বিয়ে না করলে আমি এখানে আত্মহত্যা করবো বলে জানান শিক্ষার্থী।

কম্পিউটার ল্যাব সহকারী তৌহিদুল ইসলামের সাথে এই বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে খুজে পাওয়া যায় নাই।

রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তৌহিদুল বিয়ে করার জন্য স্কুল থেকে ছুটি নিয়েছে। যেহেতু বিষটি স্কুলের শিক্ষার্থী ও ল্যাব সহকারীর তাই আমি এটির দ্রুত সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর বাবা আব্দুল গফুর এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বাদী হয়ে রাণীশংকৈল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। তৌহিদুল আমার মেয়েকে আগে প্রাইভেট পড়াতো ও তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে বিষয়টি আমি জানতে পারলে তাকে ডেকে নিয়ে বুঝাই। সে আমার মেয়েকে বিয়ে করার জন্য আমার কাছে অনুরোধ মিনতি করে। পরে সে তার স্কুলের চাকড়িটি হওয়ার জন্য আমার কাছে ২ লাখ টাকা নেয়। এখন সে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চায় না। আমার মেয়ের জীবনটা নষ্ট করে দিল। আমি এর সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, শিক্ষার্থীদের দেওয়া একটি স্বারকলীপি পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর