মোহাম্মদ রিয়াদ উদ্দিন: সকাল ১০টা।সবাই উপস্থিত হওয়া মাত্র উঠে পড়লাম গাড়িতে। আমিও চড়ে বসলাম শত স্বপ্ন নিয়ে। একটু পরেই রওনা দিলাম। গাড়ি আমাদের নিয়ে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের রাস্তা দিয়ে পাহাড় ঘেঁষে আঁকাবাঁকা উঁচুনিচু পথ পেরিয়ে পৌঁছে গেলো মানিকপুর লিচু বাগানে, নামলাম।
কেউ কেউ ব্যস্ত হয়ে পড়ল গাড়ি থেকে জিনিসপত্র নামাতে, কেউ কেউ ব্যস্ত হলো সেলফি তুলতে। শীতের দিন। সময় অল্প। দেরি করা যাবে না।এখানে দেরি করলে পরে আবার কত কিছু না মিস করতে হবে। তাই ছটফট করে বাগানের একপ্রান্তে শুরু করে দিল রান্নাবান্নার কাজ।
এ কাজে যারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন-তারা হলো হুসাইন ভাই, রেশমী ভাবী, আমির ভাই, ইউনুছ, হেলাল, সাগর, মিলন ও আবিদ ভাই। মাঝে মাঝে রবিউল, সাইফুল ভাইও ছিল। তাদের পাশে দেখে সাহায্য করছিল অনেকে।
এসব কিছু সংরক্ষণের প্রয়াসে ক্যামেরা নিয়ে হাজির ফটোগ্রাফার মাছুম পোলা ‘বিকাশ’ ভাই। বাগানের অপর প্রান্তে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ড্র’র টিকিট বিক্রি। একে একে সবাই নিচ্ছিল। এরই মাঝে হয়ে গেল জুমার আযান। নামায পড়তে গেলাম, পড়লাম।
ফিরে এলাম আবারও সেই বাগানে। খাবার রান্না হয়ে গেল। এখন খাওয়ার পালা, পরিবেশনে লেগে গেল কয়েকজন। পানির দায়িত্বে ছিল মঈন, তখন সে একটুও জিরোতে পারেনি। শুধু পানি নিয়ে এদিক-সেদিক দৌড়ঝাঁপ। বসে গেলাম খেতে। খেয়ে উঠলাম।
ততক্ষণে ঘড়ির কাঁটায় বেজে গেল ৩.০০টা। কিন্তু পথ রয়ে গেল আরও অনেক। তাই তাড়াতড়ি ড্র শেষ করা হলো। সেখানে প্রথম হলো ইয়াসির; দ্বিতীয় সাইফুল এবং তৃতীয় হলো রমিজ। এছাড়া আরও আটজন পেয়েছে বিশেষ পুরস্কার। সান্ত্বনা পুরস্কার পেল হেলাল।
এখানে আবার মুনতাহা আপু টিকিট ১০টা নিতে চাইলেও পাইনি। হ্যাঁ,তবে পাঁচটা পেয়েছে। ভাগ্যিস, পঞ্চাশ টাকা বেঁচে গেল। যে পাঁচটি নিল সেগুলোতেও পাইনি কিছু। রেশমী আপু তো পুরস্কার পাব পাব বলে অস্থির, কিন্তু না তারও একই অবস্থা।
তখন প্রিয়া আপু আবার কিসের চিন্তায় ছিল। আর আমি কোন সময় ড্রতে কিছু পাই না। এখানেও পাওয়ার কথা নয়। এসবের মাঝে শেষ হলো লিচু বাগানের আড্ডা।
এখন পালা নদী ভ্রমণের। দেরি না করে উঠে গেলাম নৌকায়। শুরু হলো যাত্রা। মাতামূহুরীর পানি ছুঁয়ে আসা বাতাস আলতো পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে গায়ে। নৌকা এগুচ্ছে ধীরে ধীরে। জিল্লু ভাইসহ বেশ ক’জনের গানের কণ্ঠ যাদু শুনে মুখরিত আর উপভোগ করছি অপূর্ব দৃশ্য। আকাশ-বাতাশ, পাহাড়-নদী কতবার দেখেছি, কিন্তু এমন অপূর্ব দৃশ্য আগে কখনো দেখিনি। আমি বিস্ময়াভিভূত। থমকে গিয়ে চুপচাপ দৃশ্যগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকি। তাকিয়ে থাকতে থাকতে উদাস হয়ে যায়। বাকিরাও দৃশ্যগুলো উপভোগ করছে, করছে আনন্দ-উল্লাস আর লাফালাফি।
এসব কিছু সংরক্ষণে লেগে আছে ফটোমেকার কহিন ভাই। সুরে সুরে আনন্দের হাওয়া বয়েছে পহাড়-নদীর পরতে পরতে। হৃদয়ে হৃদয়ে। এসব উপভোগ করতে করতে পৌঁছে গেলাম লামায়।
শিক্ষার্থী, আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া।