জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে পাওনা টাকা পেয়ে একটি পরিবারকে নিজ ঘরে তালা দিয়ে ১২ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টায় উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে স্থানীয় গ্রামপুলিশ ও ইউপি সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে অনুরোধ করেও তালা খোলাতে পারেননি। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের হস্তক্ষেপে তালা খুলে তাদেরকে অবমুক্ত করে।
এ ঘটনায় কাশিয়ানী থানার রামদিয়া ফাঁড়িতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী হেরা বেগম।
রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. শহীদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার পরানপুর গ্রামের ইলিয়াস আলী মোল্যার স্ত্রী হেরা বেগমের সাথে প্রতিবেশি মমতাজ বেগমের আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে বৃহস্পতিবার বিকালে মমতাজ বেগম লোকজন নিয়ে হেরা বেগমের বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং হুমকি-ধামকি দেয়। পুনরায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই গ্রামের মহিউদ্দিন মিন্টুসহ তার নেতৃত্বে মমতাজ বেগম, টিপু মোল্যা লোকজন নিয়ে হেরার বাড়িতে গিয়ে হামলার চেষ্টা করে। হেরা বেগম তাদের গতিবিধি দেখে দৌড়ে বিল্ডিংয়ের মধ্যে ঢুকে পড়লে মহিউদ্দিন লোকজন নিয়ে বিল্ডিংয়ের প্রবেশের মূল ক্যাচিগেট ও দুটি দরজায় তালা দিয়ে অবরোদ্ধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যায়। সকালে বিষয়টি মুঠোফোনে স্থানীয় গ্রামপুলিশ ভাষান মোল্যা ও ইউপি সদস্য রিজাউল মোল্যাকে জানালে তারাও তালা খুলে দিতে ব্যর্থ হয়। দীর্ঘ ১২ ঘন্টার পর শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা খুলে অবরুদ্ধ পরিবারকে অবমুক্ত করে। এ ঘটনার পর থেকে ওই পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।
এ বিষয় অভিযুক্ত মহিউদ্দিন মিন্টুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি টাকা পাব না। আমার বড় ভাই হেরা বেগমের কাছে টাকা পাবে। অনেকবার চাওয়ার পরও দিচ্ছেন না। অবেশেষে তার বিল্ডিংয়ে তিনটি প্রবেশ দ্বারে আমি তালা লাগিয়ে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য রিজাউল বলেন, ‘বিষয়টি সমাধানের জন্য বৃহস্পতিবার রাতইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে যাওয়া হয়েছিল। দুপক্ষকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে বসা হবে। কিন্তু এর আগেই তাদের বিল্ডিংয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন পাওনাদাররা। যা মারাত্মক অন্যায় করেছে।’
কাশিয়ানী থানার রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাবুল আখতার বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’