,

নুরুলের ‘ধান কাটা’ দেখতে মানুষের ভিড়

জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ: প্রখর রোদে পাঁচ কাঠা (৫০ শতক) জমির পাকা ধান একাই কাটতে পারবেন- স্থানীয় বাজারে বসে এমন কথা বলে একরকম বেকায়দায় পড়ে যান নুরুল আমীন। আশপাশের মানুষ এ কথায় ঠাট্টা শুরু করলেও তিনি তার কথায় অনড় থাকেন। অনেকের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছোড়া হয়। কেউ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে না চাইলেও অনেকে সর্বোচ্চ লাখ টাকার বাজি ধরতে রাজি হয়ে যান বলে জানা গেছে।

অবশেষে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন নুরুল। এলাকায় প্রচার হয়, মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকালে বাড়ির পাশেই জমিতে নুরুল হক ধান কাটতে যাবেন। ব্যাপক আগ্রহী হয়ে ওঠে মানুষজন।

মঙ্গলবার ভোরে ফজরের নামাজের পর ধান কাটা শুরু করেন নুরুল। বিকেল ৪টার মধ্যেই ধান কাটা শেষ করেন নুরুল আমীন। একা পাঁচ কাঠা জমির ধান কাটা প্রায় অসম্ভব বিষয়। আর এ ঘটনা প্রত্যক্ষ  করতে শত শত মানুষ জমির পাশে দাঁড়িয়ে থেকে নুরুলকে উৎসাহ দিতে থাকেন। সেই সাথে বাজিকররা পাশে দাঁড়িয়ে তাদের তৎপরতার ব্যস্ত ছিলেন।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাটি সাভার গ্রামের গোরস্থান বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ফসলি ক্ষেতের চারপাশে অসংখ্য লোকজন ভিড় করে আছেন। সেই খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরাসরি প্রচার করায় তা ছড়িয়ে পড়ায় দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসতে থাকেন।

ফসলি ওই ক্ষেতের মালিক ওই গ্রামের মো. আব্দুল জলিল (৫৫)। তিনি জানান, তার ধান পেকেছে অনেকে আগেই। প্রয়োজনীয় শ্রমিক না পাওয়ায় কাটতে দেরি হচ্ছিল। এ অবস্থায় পাশের বাড়ির নুরুল রাজি হলে তাকে প্রতি কাঠা ৭০০ টাকা করে দেবেন বলে রফা হয়। পরে তিনি জানতে পারেন, নুরুল একাই ধান কাটবেন বলে চ্যালেঞ্জ করেন। তার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বলা হয়, প্রতি কাঠার ধান কাটতে ৭০০ টাকা করে এবং একটি নতুন লুঙ্গি দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি আমলে না নিলেও মঙ্গলবার তার অনুমতি নিয়ে ভোর থেকেই ধান কাটা শুরু করে দেন। এই ক্ষেতের ধান কাটিয়েছেন সর্বোচ্চ ১০ জন শ্রমিক দিয়ে। তারপরও দিন লেগে গেছে। কিন্তু নুরুলের এ ঘটনা তাকে অবাক করেছে। এর মধ্যে এলাকার অনেকে নুরুলের ধান কাটা নিয়ে বাজিও ধরেন। ধান কাটার সময় ক্ষেতের পাশে অনেককেই উদ্বিঘ্ন দেখা গেছে।

নুরুল আমীন বলেন, আমি সবসময় ২০-৩০ শতক (২-৩ কাঠা) জমির ধান একাই কাটি। কিন্তু গ্রামের লোকজন সেটা বিশ্বাস করতে চাননি। তাই সবাইকে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিই, ৫০ শতক জমির ধান একাই একদিনে কেটে দেখিয়ে দেব। তাই জমির মালিকে সাথে প্রতি ১০ শতক ৭০০ টাকা চুক্তিতে ধান কেটে দিচ্ছি। এটা আমার চুক্তিতে ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর