জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মিল্টন তালুকদার ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলার গোপালপুর বাজারে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী সৌরভ বাইন, শাওন পাটোয়ারী, অভিভাবক তুলি তালুকদার ও মলিনা তালুকদার বক্তব্য রাখেন।
মলিনা তালুকদার বলেন, গত ২৪ জুন বিকালে টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর পঞ্চ পল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিল্টন তালুকদার ভ্যানে করে গোপালপুর বাজার থেকে পাশ^বর্তী শাওড়াপাড়া গ্রামে বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সরাইডাঙ্গা গ্রামে পৌঁছালে ভ্যানের গতিরোধ করেন কোটালীপাড়ার বর্ষাপাড়া গ্রামের চান মিয়া (রবি) বিশ্বাসের ৩ ছেলে দুলাল, কিবরিয়া ও রসুলসহ ৭/৮ জন। শিক্ষক মিল্টন তালুকদারকে তারা বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মুখে বিষাক্ত কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য ঢেলে দেয়। তখন শিক্ষক মিল্টন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাকে ফেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে এলাকাবাসী শিক্ষক মিল্টন তালুকদারকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
তারা আরো বলেন, শিক্ষক জাতির মেরুদন্ড। তাই শিক্ষকের ওপর যারা হামলা করেছেন তাদের উপযুক্ত বিচার চাই। যাতে আগামীতে কোন শিক্ষকের উপর কেউ হামলা করার সাহস না পায়।
বর্তমানে বাড়িতে চিকিৎসাধীন শিক্ষক মিল্টন তালুকদার বলেন, বর্ষাপাড়া গ্রামের চান মিয়া বিশ্বাসের ছেলে কিবরিয়া বিশ্বাস আমাদের শরীক বিমল তালুকদারের কাছ থেকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর মৌজায় ১৫ শতক বাড়ির জমি ক্রয় করেন। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রেশন করার সময় কৌশলে বিমল তালুকদারের কাছ থেকে কিবরিয়া ৩২ শতাংশ জমি লিখে নেয়। পরে কিবরিয়া আমার পৈত্রিকভিটা দখল করতে আসলে আমি বাঁধা দিই। আমার একাধিকবার বাঁধার মুখে তারা অতিরিক্ত জায়গা দখল করতে পারেনি। কিন্তু কোথাও সুবিধা করতে না পেরে কিবরিয়া বিশ্বাস তার লোকজন নিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে ও বিষাক্ত কেমিক্যাল মুখে ঢেলে দেয়। আমি এর শাস্তির দাবি করছি।
এ ব্যাপারে তিনি কোটালীপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কিবরিয়া বিশ্বাসের মুঠোফোরে বার বার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কোটালীপাড়া থানার পরিদর্শক জিল্লুর রহমান বলেন, শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মমলা হয়েছে। এজাহারে উল্লেখিত ৪ জন আসামির মধ্যে আমরা ২ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। ওই ২ জন জামিনে বের হয়ে এসেছেন। অপর দুই আসামী পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।