,

কয়লা বোঝাই বিদেশি জাহাজের ক্যাপ্টেন সহ ৬ চীনা নাবিক সুস্থ

বাগেরহাট প্রতিনিধি :  ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে আশা এমভি ‘চ্যাং হ্যাং জিং হাই’ নামক চীনা পতাকাবাহি একটি বানিজ্যিক জাহাজ বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে করোনা ভাইরাস উপসর্গ নিয়ে ৬ চিনা নাবিক বন্দরের হারবাড়িয়া এলাকায় অবস্থান করে। শারীরিক অসুস্থ ক্যাপ্টেনসহ ওই ৬ চীনা নাবিক অবশেষে ২৪ঘন্টা পর সুস্থ হয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে বন্দরের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদস্যরা তাদের পুনরায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সুস্থতার ছাড়পত্র প্রদান করে ওই ৬ নাবিকের। সোমবার জাহাজটি মোংলা বন্দরে ভেড়ার পর ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনসহ ৬ চীনা নাগরিকের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ পরিলক্ষিত হওয়ায় তাদেরকে ওই জাহাজের মধ্যেই আইসোলেশনে রাখে স্বাস্থ্য বিভাগ। এদিকে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই জাহাজটি থেকে পণ্য খালাসের জন্য শ্রমিক কর্মচারীদের পাঠিয়েছে পণ্য খালাসকারী প্রতিষ্ঠান (ইষ্টিভিডরস) মেসার্স গ্রীণ এন্টারপ্রাইজ।

ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা বোঝাই করে গত ১ এপ্রিল ‘মের্সাস চ্যাং হ্যাং জিং হাই’ জাহাজটি চট্রগ্রাম বন্দরে এসে ৩০ হাজার মেঃ টন কয়লা খালাস করে। কিন্ত সেখানে স্বাস্থ্য বিভাগের পরিক্ষায় ২০ নাবিকের মধ্যে বেশ কয়েকজন নাবিকের শরীরে জ্বরের তাপমাত্র বৃদ্ধি হওয়ায় চট্রগ্রাম বন্দরে অবস্থানকালে সব নাবিককে ওই জাহাজের মধ্যেই ১৪দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। জাহাজে থাকা কয়লা থেকে চট্ট্রগ্রামে খালাস করার পর সোমবার দুপুরে বঙ্গোপসাগর হয়ে বহিঃনঙ্গর দিয়ে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া ৩নং মুরিং বয়ায় নোঙ্গর করে বাকি কয়লা খালাসের জন্য। পন্য খালাসকারী প্রতিষ্ঠান কয়লা খালাসের জন্য শ্রমিক নিয়োগ করে জাহাজে পাঠায়।

মাংলা বন্দরের করোনা ভাইরাস পর্য়বেক্ষন কমিটির প্রধান ডাঃ সুফিয়া খাতুন ও ডাঃ আসিফ’র সমন্নয় একটি টিম জাহাজে প্রবেশ করে এবং ক্যাপ্টেনসহ ওখানে থাকা ২০ নাবিককে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করা হয়। ২০ নাবিকের মধ্যে জাহাজের ক্যাপ্টেনসহ ৬ চীনা নাবিকের শরীরে পুনরায় তাপ মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাথে সাথে জাহাজের পন্য খালাস বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। মুহুর্তের মধ্যে জাহাজে থাকা সকল শ্রমিক ও অন্যান্য ষ্টাফগন জাহাজ থেকে নেমে পরে। ডাঃ সুফিয়া খাতুন ক্যাপ্টেনসহ ৬নাবিককে জাহাজের মধ্যেই আইসোলেশনে রাখে।

মঙ্গলবার দুপুরে পুনরায় পরিক্ষায় তাদের শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়া নাবিকদের সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় এবং জাহাজে পন্য খালাস চালু করার জন্য অনুমতি দেয়া হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মোংলা পোর্ট হেলথ অফিসার ডাঃ সুফিয়া খাতুন জানান, বিদেশী ওই ৬ জন নাবিকের শরীরে স্বাভাবিকের চাইতে জ্বরের মাত্রা বেশি পাওয়ায় তাদেরকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার দিনে পুনরায় জাহাজের ওই নাবিকদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। এতে তাদের শারীরিক অবস্থআ উন্নতি হলে নাবিকদের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন  জানান, মোংলা বন্দরে কোন জাহাজ আসলেই আগে তার নাবিকদের শারীরিক নিরীক্ষা শেষে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে পণ্য বোঝাই খালাসের অনুমতি দেয়া হয়। তাই এ জাহাজটির মধ্যে নাবিকদের শরীরের কিছুটা সমস্যা ছিল তা এখন ঠিক হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা বোঝাই করে মোংলা বন্দরে খালাসের উদ্দেশ্যে আসা অপর একটি জাহাজের তিন ফিলিপাইন নাবিকের শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। পরবর্তিতে তাদের আইসোলেশনে রাখা হলে তারা ধীরে ধীরে সুস্থ্য হন।

এই বিভাগের আরও খবর