জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে একটি সমাজিক ক্লাব দখল করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বানানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
উপজেলার জয়নগর বাজারে অবস্থিত ‘জয়নগর পল্লী উন্নয়ন যুবক সমিতি’র কার্যালয়টি ১৫ বছর ধরে মহেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন তারা।
ক্লাবটি দখলমুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন সদস্যরা।
জানা গেছে, ১৯৬০ সালে উপজেলার জয়নগর বাজারে মাংস পট্টিতে চারচালা একটি টিনের ঘরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ‘আজাদ ক্রীড়া সংঘ ক্লাব’ নামে একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়। এলাকার ক্রীড়ামোদি মানুষের আড্ডাস্থল ছিল এই ক্লাব। পরবর্তীতে এলাকার যুবসমাজকে মাদক, জুয়া ও অসামাজিক কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখতে এবং সুস্থধারা বিকাশের লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে ‘জয়নগর পল্লী উন্নয়ন যুবক সমিতি’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন গঠন করা হয়। সংগঠনটি নিবন্ধিত হয়ে আজাদ ক্রীড়া সংঘ ক্লাবের সাথে একীভূত হয় এবং একই ক্লাব ঘর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন সদস্যরা।
অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাতের আঁধারে ওই সমিতির সাইনবোর্ড নামিয়ে ‘মহেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়’ লেখা দলীয় সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। ঘরের তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে দখলে নেয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ওখান থেকে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা। এক পর্যায় ওই সংগঠনের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হয়নি।
তৎকালীন সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম বকুল মিয়া বলেন, ‘ক্লাবটি আমাদের সামাজিক একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। দলমত নির্বিশেষে সকলে আমরা ওখানে আড্ডা দিতাম। এছাড়া সমিতি গঠনের পর থেকে আমরা ২০০৮ সাল পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। ২০০৯ সালের দিকে স্থানীয় রাজনীতির কারণে আমরা সমিতির কার্যক্রম বন্ধ দেই। এরপর তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলী শিকদারের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা জোর করে আমাদের দেওয়া তালা ভেঙে ক্লাবঘরে চেয়ার-টেবিল উঠায়। এরপর থেকে সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এটি আওয়ামী লীগের কোনো দলীয় কার্যালয় নয়। কিন্তু আমরা ভয়ে বাঁধা দেইনি। এখন আমরা ক্লাব ঘরটি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ বিষয় জানতে মহেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোশারফ হোসেন মিয়ার মুঠোফোনে কল করে বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মু. রাসেদুজ্জামান বলেন, ‘সমিতিটি যেহেতু পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়ের নিবন্ধিত, তাই সমিতির কাগজপত্র হালনাগাদ করতে বলেছি। দখল হওয়া ক্লাব ঘরটি উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’