,

কর্মসূচিতে চেয়ারম্যানের দুর্নীতি, তদন্তে গিয়ে লাঞ্ছিত কর্মকর্তা

জেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট: মোংলায় সরকারের অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহান আহম্মেদ।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে তদন্ত করতে গেলে অভিযুক্ত মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডলের ভাই কংকন কুমার মন্ডল লাঞ্ছিত করেন সংশ্লিষ্ট কাজের ট্যাগ অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তাকে। এছাড়াও কংকন কুমার মন্ডলের নাম পাওয়া যায় অতিদরিদ্র শ্রমিকের তালিকায়।

সোহান আহম্মেদ জানান, মিঠাখালী ইউনিয়নের বসির খন্ড, খানজাহান আলী বাজার ও খড়খড়িয়া এলাকায় ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজের চরম অনিয়ম পেয়েছেন তিনি। বসির খন্ডে ৩৩ জন শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও ছিলেন ২৩ জন। খানজাহান আলী বাজার এলাকায় ২৭ জন থাকার কথা হলেও ছিলেন ২৬ জন। এছাড়াও খড়খড়িয়া এলাকায় ৩৯ জনের জায়গায় ৩৩ জন শ্রমিক উপস্থিত পান। ৪০ দিনের কর্মসূচির মাটি রাস্তার পাশে না দিয়ে চেয়ারম্যান তার নিজ বাড়ির সীমানা প্রাচীর মজবুত করতে ব্যবহার করার প্রমাণ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনা অস্বীকার করেন। এ সময় সংবাদ প্রচারে ক্ষেত্রে হুমকিও প্রদান করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ওই ঘটনায় চেয়ারম্যানের ভাই কংকন মন্ডল বুধবার সোহান আহম্মেদের অফিস কক্ষে পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। এ সময় তার ভাই চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ৪০ দিনের কর্মসূচি কাজের সকল শ্রমিক উপস্থিত না থাকা, তালিকায় চেয়ারম্যানের ভাইয়ের নাম থাকা ও কর্মসূচির মাটি তার বাড়ির সীমানা প্রাচীরে দেওয়ার বিষয়ে লোক পাঠিয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইউএনও। তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাফর রানা বলেন, `আমি নতুন এসেছি, সকলকে চিনি না। তালিকায় চেয়ারম্যানের ভাইয়ের নাম রয়েছে জানতে পেরে চেয়ারম্যানকে বলেছি কেন এমন করেছেন তিনি। আর ট্যাগ অফিসারকে তার ভাই লাঞ্ছিত করেছে এটাও সত্য। শুনেছি তার বাড়ির সীমানা প্রাচীরের নিচেও কর্মসূচির মাটি দিয়েছেন। এসব দৃষ্টিকটু দেখায় যা চেয়ারম্যান হিসেবে করা ঠিক না। তাই এসব শুনে বাকি কাজ যাতে ঠিকমত হয় সেজন্য ইউএনও স্যার ও আমি চেয়ারম্যানকে চাপে রেখেছি।’

এই বিভাগের আরও খবর