রংপুর ব্যুরো: রংপুর পর্যটন মোটেলে অন্যরক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে খুশি খাতুন (১৮)।
বৃহস্পতিবার এ বিয়ের আয়োজক রংপুর জেলা প্রশাসন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিক, বড় বড় ব্যবসায়ী, সংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এতিম মেয়ে খুশি জানে না বাবা-মা কে। সে বেড়ে ওঠেছিল রংপুরের সমাজসেবা অধিদফতর ও শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (বালিকা)।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মোছা. খুশি খাতুন নামে এতিম মেয়েটি ছোটবেলা থেকে মানুষের বাসা-বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে ছিল। সেখানে সে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। গৃহকর্তার নির্যাতনে সে ওই বাসা থেকে পালিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন তাকে থানায় সোপর্দ করেন।
২০১৪ সালে ২৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ড রংপুর সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় তাকে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (বালিকা) রাখা হয়। সেখানে ১৮ বছর পূর্ণ হলে জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় তাকে কারুপণ্য নামে শতরঞ্জি তৈরি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়া হয়।
পরে রংপুর নগরীর নিউ সাহেবগঞ্জ এলাকার আজিজুল ইসলামের ছেলে মো. লিমন মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ের বিষয়টি পাকাপোক্ত করে জেলা প্রশাসন। ছেলেটির পেশা রাজমিস্ত্রী।
নবদম্পতি অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, তারা একে অপরকে পেয়ে খুশি। এ জন্য তারা জেলা প্রশাসক, সমাজসেবা কর্তৃপক্ষসহ রংপুরের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তাদের ভবিষ্যৎ বংশধর যাতে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে এ জন্য সবার কাছে দোয়া চান তারা।
জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান, মেয়েটি এতিম। তার বাবা-মা নেই। প্রশাসন পাশে আছে এমন ধারণা যেন এতিম মেয়েটির হয় এ জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে সে অসহায়ত্ব বোধ করতে না পারে। তারা সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে এ জন্য তাদের নামে পারিবারিক পেনশনের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া প্রশাসন থেকে সব ধরনের সহযোগিতাও অব্যাহত রাখার চেষ্টা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, পর্যটন মোটেলে জাঁকজমক আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বিয়ে দেয়ার আর একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে আরও যে ২ শতাধিক অনাথ বাচ্চা আছে তাদের নিয়ে আনন্দ করা এবং তাদেরও বোঝানো যে তোমরা একা নও আমরা সবাই তোমাদের পাশে আছি।