,

একই পরিবারে চার প্রতিবন্ধী, আজও জোটেনি ভাতা

বিডিনিউজ ১০ ডটকম: ‘বয়স হয়েছে তাই এখন আর কাজ করতে মন চাই না। কিন্তু কী করব? ৪ শতাংশ বসতভিটা ছাড়া কোনো জমিও নেই। তাই অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা উপার্জন করি তা দিয়েই কোনোরকম সংসার চালাই।’

‘কাজে না গেলে স্ত্রী সন্তান না খেয়ে থাকবে। আল্লাহ আমায় ৬ ছেলে-মেয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে আবার ৪ জন কথা বলতে পারে না। সন্তান মা-বাবার কাছে আদরের তাই কষ্ট করে হলেও কোনোরকম ২ বেলা খাওয়াইতে হয়।’

হৃদয়বিদারক কথাগুলো বলছিলেন নেত্রকোনার মদন উপজেলা তিয়শ্রী ইউনিয়ের কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত চান্দু মিয়ার ছেলে দিনমজুর আবুল মিয়া (৫০)।

স্ত্রী ও ৬ সন্তান নিয়ে আবুল মিয়ার সংসার। এর মধ্যে ৪ সন্তানই বাক-প্রতিবন্ধী। বড় ছেলে দিদারুল ইসলাম (১৫) বাক-প্রতিবন্ধী। কথা বলতে পারে না কিন্তু সংসার চালাতে বাবার কষ্ট হয়। তাই বাবার সাথে সাথেই অন্যের বাড়িতে কাজ করতে যায়। বড় মেয়ে স্বর্না মনি (১৩) সেও বাক-প্রতিবন্ধী। কথা বলতে না পারলেও ঘরে মায়ের কাজে সহযোগিতা করে। লাকী আক্তার (৮) ও মোরসালিন (৩) বছর বয়সী তারাও বাক-প্রতিবন্ধী।

সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতার সু-ব্যবস্থা করলেও একটি দিন-মজুর পরিবারের ৪ জন বাক-প্রতিবন্ধী সন্তান থাকার পরেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোনো সরকারি ভাতা। বর্তমানে খুবই কষ্টে জীবন যাপন করছে পরিবারটি।

কৃষ্ণপুর গ্রামের আবুল মিয়ার বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী রাজিয়া খাতুন বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের ৬ সন্তান দিয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন কথা বলতে পারছে না। শুনেছি সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতা দেয়। আমাদের ভাগ্যে এখন পর্যন্ত কোনোরকম সরকারি ভাতা বা সাহায্য জোটেনি। আমাদের জন্য কি সরকার কোনো ভাতা দেবে না?’

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আহমেদ জানান, কৃষ্ণপুর গ্রামের দিন-মজুর আবুল মিয়ার প্রতিবন্ধী স্বর্না মনির নাম ২০১৯-২০ অর্থবছরের তালিকায় দেয়া হয়েছে। সমাজসেবা থেকে কার্ড বিতরণ হলে ভাতা পাবে।

মদন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহ জামাল আহম্মেদ জানান, একই পরিবারের চার প্রতিবন্ধীর বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে আবেদন করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর