নিজস্ব প্রতিবেদক: বাবা-মা হারানোর সময় মেঘের বয়স ছিল পাঁচ বছর। সেই কোলের শিশু মেঘের বয়স এখন ১৩ পেরিয়েছে। শৈশব ছেড়ে কৈশোরে পা রেখেছে। তবে মেঘের বাবা-মা সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো কুলকিনারা হয়নি।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফের ২৩ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল আলম জানান, দ্রুতই তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
সাগর সারোয়ারের মা সালেহা মনি ঘটনার তদন্ত না হওয়ায় হতাশ। তিনি বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে আমার সঙ্গে তদন্ত সংস্থার কোনো যোগাযোগ নেই। এখন তদন্ত কর্মকর্তা কে, সেটাও আমি জানি না। তদন্ত নিয়ে নাটক করা হচ্ছে। কিন্তু আমি বিচার চাইতেই থাকবো, উপরে আল্লাহ আছেন তো।
আট বছর আগে ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতেই নিজ ঘরে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। তারা নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম গত ৮ বছরে ৫ বার হাত বদল হয়েছে। সবশেষ মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিকুল আলম। গত নভেম্বরে হাইকোর্টকে তিনি জানিয়েছিলেন, তদন্তে কোনো ক্লু (সূত্র) পাওয়া যায়নি। চারটি ডিএনএ প্রতিবেদনের মধ্যে দু’টি মিলেছে। এ দু’টিতে আসামিদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে সেগুলো ফের যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ৭১ বার সময় নেওয়া হয়েছে।
সাগর রুনি হত্যার পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। তখন খুনিদের খুঁজে বের করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। তবে আট বছরেও সেই আশ্বাস পূরণ হয়নি।
এদিকে সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবিতে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সকাল সাড়ে ১০টায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হবে। সোমবার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।