,

আদালতের রায়ের পরও জমির দখল পাচ্ছেন না দুই মুক্তিযোদ্ধা

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: আদালতের রায় পাওয়ার পর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে জমির দখল বুঝে পাচ্ছেন না দুই মুক্তিযোদ্ধা সহোদর। জমির দখল বুঝে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা।

ভূক্তভোগী ওই মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলা সদরের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাই শেখ ইদ্রিস আলী ১৯৮৬ সালে কাশিয়ানী মৌজার পেটি ১৮ নং খতিয়ানের সে. মি. ৩২৮ দাগের ৪ শতাংশ জমির ২ শতাংশ জমি দলিলমূলে ক্রয় করেন। জমির একাংশের মালিক ছিলেন কৃষ্ণধন সাহা ও বাকিংশের মালিক ছিলেন কৃষ্ণধন সাহার ব্যবসায়িক অংশীদার প্রভাত চন্দ্র সাহা। কৃষ্ণধন মারা যাওয়ার পর তার ছেলে গৌর কিশোর সাহা পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমির অংশ শেখ আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাই শেখ ইদ্রিস আলীর কাছে বিক্রি করে দেন। শেখ আব্দুর রাজ্জাক আবার ১৯৮৭ সালে ২ শতাংশের ১ শতাংশ জমি তার ভাই শেখ গোলাম মোস্তফার কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু এরআগে এসএ জরিপের সময় প্রভাত চন্দ্র সাহা চতুরতা করে গৌর কিশোর সাহার নাম বাদ দিয়ে পুরো জমিটা নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে নেন। এরপর তিনি ১৯৬৫ সালের দিকে এদেশ থেকে ভারতে চলে যান। পরবর্তীতে সরকার জমিটি খাস খতিয়ানভূক্ত করে নেয়।

২০১০ সালের জমির স্বত্ব দাবি করে ক্রয়সূত্রে জমির মালিক শেখ ইদ্রিস আলী ও তার ভাই শেখ গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়ন সহকারি কর্মকর্তাকে বিবাদী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২০১৩ সালে সরকারের পক্ষে রায় ও ২০১৪ সালে ডিগ্রি দেন আদালত।

এতে মামলার বাদীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রায়ের বিপক্ষে পুনর্বিচারের আবেদন করেন। বিচারিক আদালত আবেদনের বিষয়টি আমলে নিয়ে ২০১৯ সালে পুনরায় রায় প্রদান করেন এবং গত ১১ নভেম্বর আদালত দলিল-দস্তাবেজ পুন:পর্যালোচনা করে জমি স্বত্ত¡াধিকার বাদীগণকে ফিরিয়ে দিতে এবং দখল ছেড়ে দিতে আদেশ (ডিগ্রি) দিয়েছেন। এ রায়ের ৬০ দিনের মধ্যে নালিশী ভূমি বাদী পক্ষকে বন্টন করে দেওয়ার জন্য বিবাদীপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ৬০ দিন অতিবাহিত হলেও বাদীপক্ষ ভূমির দখল বুঝে না পাওয়ায় আদালত হতে এ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ ও চূড়ান্ত ডিগ্রি আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ ও চূড়ান্ত ডিগ্রি আদেশ দেন। আদেশের পরও জমির দখল বুঝে না পেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দুই মুক্তিযোদ্ধা সহোদর।

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রথীন্দ্রনাথ বলেন, ‘এর আগে সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন আদালত। পরবর্তীতে বাদীপক্ষ আপিল করলে পুনরায় আদালত তাদের পক্ষে রায় দেন। তবে আপিলের জন্য আমরা (সরকার পক্ষ) আদালতের কাছে তিন মাসের জন্য সময় চেয়েছি।’

এই বিভাগের আরও খবর