,

শতবর্ষী খেলার মাঠ কেটে পুকুর

জেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ জেলা শহরে সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতরের শতবর্ষের পুরোনো খেলার মাঠটিকে পুকুরে রূপান্তর করছে জেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

জেলা প্রশাসনের দাবি, মাঠটির একাংশকে বড় অর্থাৎ খেলার উপযোগী করতে একদিকে গর্ত করে মাটি তোলা হচ্ছে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, পুকুরে রূপান্তর হচ্ছে মাঠটির বেশিরভাগ অংশই।

স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতরে মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আবাসিক এলাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব-দক্ষিণ দিকে সরকারি কর্মকর্তাদের থাকার জন্য কয়েকটি ভবন, উত্তর দিকে প্রবেশের রাস্তা ও মাঝে বিশাল খেলার মাঠ।

সরেজমিনে দেখা যায়, এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি তুলে মাঠের তিন ভাগের প্রায় দুই ভাগ অংশ গর্তে পরিণত করা হয়েছে। স্কুলের সামনে অবশিষ্ট জায়গাটুকু সমতল রাখা হলেও যেখানে খেলাধুলা করা সম্ভব না।

স্থানীয়রা জানান, সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতরের এ মাঠটি শতবর্ষের পুরোনো। ১৯৭৩ সাল থেকে এ মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবলসহ বিভিন্ন লীগ খেলার আয়োজন করা হতো। তবে গত কয়েক বছর ধরে সংস্কারের অভাবে মাঠটি খেলার অযোগ্য হয়ে পড়ে। এটি সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলো এলাকার তরুণ সমাজ। কিন্তু এটিকে সংস্কারের পরিবর্তে পুকুরে রূপান্তর করায় এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণ রাজু আহমেদ, সৌরভ, ফারুক, শেবুল ও নূর ইসলাম- এরা জানালেন, ছোট বেলা থেকেই আমরা এ মাঠে খেলাধুলা করে বেড়ে উঠেছি। সবার চোখের সামনে মাঠটিকে পুকুরে রূপান্তর করা হচ্ছে। এই মাঠটি না থাকলে এলাকার তরুণ সমাজ বিপথগামী হবে। মাঠটি রক্ষা করা জরুরি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন জানান, স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতরের মাঠটি সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহারের জন্য হলেও দীর্ঘদিন ধরে এলাকার তরুণরা এতে খেলাধুলা করতো। হবিগঞ্জ শহরে এমনিতেই মাঠের অভাব। আর এখন যদি এই মাঠটিও না থাকে, তাহলে তরুণ সমাজ মাদক সেবনসহ বিভিন্ন খারাপ অভ্যাসে জড়িয়ে পড়বে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতরের মাঠটির সঙ্গে এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে। হবিগঞ্জ শহরে তরুণদের বিনোদনের জন্য একটি পার্কও নেই। সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহারের পাশাপাশি বিকেলে এই মাঠটিতে স্থানীয় তরুণরা খেলাধুলা করতো। যেখানে জেলা শহরের লোকজন একটি মাঠ অথবা পার্কের জন্য হা-পিত্যেশ করছে, সেখানে একটি মাঠকে পুকুরে রূপান্তর করা অনাকাঙ্খিত। শিগগিরই বাপা ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে মাঠটি পরিদর্শন করা হবে।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী বলেন, মাঠে পুকুর করার বিষয়টি আমি জানি না।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, মাঠটিকে বড় করে খেলার উপযোগী করতে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি তোলা হচ্ছে। মাঠের ভেতরে বাইরে থেকেও কিছু মাটি আনা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর


Antalya korsan taksiAntalya korsan taksi