,

দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো ‘বঙ্গবন্ধু রেল জাদুঘর’

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ:  প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, অধিকার আদায়ের আন্দোলন, সংগ্রাম এবং তার কর্মজীবন পৌঁছে দিতে দেশে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠা হলো ভ্রাম্যমাণ বঙ্গবন্ধু রেল জাদুঘর। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ নামের এ জাদুঘরটি দেশব্যাপী প্রদর্শনের জন্য চালু করেছে।

সোমবার (১ আগস্ট) রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গোপালগঞ্জে রেলস্টেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোচ দুটির প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

একটি ব্রডগেজ এবং একটি মিটারগেজ কোচ নিয়ে তৈরি এই ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর। ভ্রাম্যমাণ এ রেল জাদুঘর দেশের বিভিন প্রান্তে থাকা স্টেশনগুলোতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থাকবে এবং ওই অঞ্চলের মানুষের কাছে প্রদর্শন করা হবে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির উদ্বোধন করেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ঢাকা থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত রেল জাদুঘরটির ট্রায়াল সম্পন্ন করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গতকাল থেকে মিটার গেজ শুরু হয় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে আর ব্রডগেজ শুরু হয় গোপালগঞ্জ স্টেশন থেকে। জাদুঘর দুইটিতে বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর নির্মিত তথ্যবহুল ও মনোমুগ্ধকর বারোটি পৃথক চিত্র ও দুর্লভ আলোকচিত্রের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে।

জানা গেছে, দুটি কোচের একটি থাকবে দেশের পূর্বাঞ্চলে অন্যটি থাকবে পশ্চিমাঞ্চলের রেলস্টেশনে। জাদুঘরটি কোন রেলস্টেশনে কত দিন থাকবে তার একটি শিডিউল জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) মো. মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী জানান, কোচকে সর্বোচ্চ প্রযুক্তিতে সাজানো হয়েছে। জাদুঘরটিতে ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতার ঐতিহাসিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, সংগ্রামী ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। সাধারণ দর্শনার্থীরা টাচ স্ক্রিনে আঙুল স্পর্শ করতেই ভেসে আসবে বঙ্গবন্ধু ছবি, ভাষণ, তার জীবনের নানা দিক-নির্দেশনা। প্রায় দেড় বছর সময় ধরে এটি তৈরি করা হয়েছে। দেশের ৮০ শতাংশ রেলস্টেশন গ্রাম-বাংলায় ছড়িয়ে রয়েছে। প্রান্তিক মানুষের কাছে জাতির পিতার ঐতিহাসিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ জাদুঘর।

শিডিউল অনুযায়ী, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে একটি জাদুঘর থাকবে ১ থেকে ৫ আগস্ট, ভাটিয়ারী স্টেশনে থাকবে ৫ থেকে ৭ আগস্ট, সীতাকুন্ড স্টেশনে থাকবে ৭ থেকে ৯ আগস্ট, চিনকিআস্তানা স্টেশনে থাকবে ৯ থেকে ১১ আগস্ট, ফেনী জংশনে থাকবে ১১ থেকে ১৫ আগস্ট, গুণবতী স্টেশনে থাকবে ১৪ থেকে ১৭ আগস্ট, নাঙ্গলকোর্ট স্টেশনে থাকবে ১৬ থেকে ১৯ আগস্ট, লাকসাম জংশনে থাকবে ১৮ থেকে ২৩ আগস্ট, চৌমুহনী স্টেশনে থাকবে ২৪ থেকে ২৫ আগস্ট, মাইজদীকোর্ট স্টেশনে থাকবে ২৬ থেকে ২৭ আগস্ট, নোয়াখালী স্টেশনে থাকবে ২৮ থেকে ২৯ আগস্ট, চাঁদপুর স্টেশনে থাকবে ৩০ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর, কুমিল্লা স্টেশনে থাকবে ২ থেকে ৪ নভেম্বর, আখাউড়া স্টেশনে থাকবে ৫ থেকে ৮ নভেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে থাকবে ৯ থেকে ১০ নভেম্বর, ভৈরব স্টেশনে থাকবে ১১ থেকে ১২ নভেম্বর, নরসিংদী স্টেশনে থাকবে ১৩ থেকে ১৪ নভেম্বর, টঙ্গী জংশনে থাকবে ১৫ থেকে ১৬ নভেম্বর এবং ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে থাকবে ১৭ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।

অন্যদিকে আরেকটি কোচ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের গোপালগঞ্জ স্টেশনে থাকবে ১ থেকে ৫ আগস্ট, কাশিয়ানী স্টেশনে থাকবে ৬ থেকে ৭ আগস্ট, ভাটিয়াপাড়া ঘাট স্টেশনে থাকবে ৯ থেকে ১০ আগস্ট, মধুখালী জংশনে থাকবে ১২ থেকে ১৩ আগস্ট, রাজবাড়ী স্টেশনে থাকবে ১৫ থেকে ১৭ আগস্ট, ফরিদপুর স্টেশনে থাকবে ১৯ থেকে ২০ আগস্ট, পাংশা স্টেশনে থাকবে ২২ থেকে ২৩ আগস্ট, কুমারখালী স্টেশনে থাকবে ২৫ থেকে ২৬ আগস্ট, কালুখালী জংশনে থাকবে ২৮ থেকে ২৯ আগস্ট, কুষ্টিয়া স্টেশনে থাকবে ৩০ থেকে ৩১ আগস্ট, খুলনা স্টেশনে থাকবে ২ থেকে ৭ নভেম্বর, দৌলতপুর স্টেশনে থাকবে ৯ থেকে ১০ নভেম্বর, নোয়াপাড়া স্টেশনে থাকবে ১২ থেকে ১৩ নভেম্বর, যশোর স্টেশনে থাকবে ১৫ থেকে ১৮ নভেম্বর, বেনাপোল স্টেশনে থাকবে ২০ থেকে ২১ নভেম্বর, নাভারণ স্টেশনে থাকবে ২২ থেকে ২৩ নভেম্বর, মোবারকগঞ্জ স্টেশনে থাকবে ২৫ থেকে ২৬ নভেম্বর, দর্শনা স্টেশনে থাকবে ২৮ থেকে ২৯ নভেম্বর এবং চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে থাকবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে রেলওয়ের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার, অতিরিক্ত মহা পরিচালক মঞ্জুরুল আলম, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বক্তব্য রাখেন।

এই বিভাগের আরও খবর


Antalya korsan taksiAntalya korsan taksi