,

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত

জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর:  শরীয়তপুরের ডামুড্যার একটি স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে, তদন্তে গঠন করা হয়েছে কমিটি।

এ ঘটনায় তোপের মুখে পড়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারও।

অভিযুক্ত রথি কান্ত ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পাশাপাশি ছাত্রী স্কাউটেরও ইন্সট্রাক্টর।

বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রী ও দুজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কিছুদিন আগে এক ছাত্রী স্কাউটে ভর্তি হতে আগ্রহ দেখায়। ছুটির পর তাকে স্কুলের একটি কক্ষে দেখা করতে বলেন শিক্ষক রথি কান্ত। মেয়েটি সেখানে গেলে তাকে যৌন হয়রানি করা হয়। মেয়েটি পালিয়ে বের হয়ে ঘটনা জানায় স্কাউটের বন্ধুদের।

আরেক ছাত্রী জানায়, এ ঘটনা নিয়ে স্কাউটে বন্ধুদের সঙ্গে মেয়েটির কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পরে ফেসবুকে। এরপর ডামুড্যা উপজেলা শহরে বিষয়টি জানাজানি হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কাউট টিমের আরেক ছাত্রী বলে, ‘আমাদের অনেককেই এই নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তবে মান-সম্মানের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে চায় না। শিক্ষকদের এমন অনিয়ম প্রশয় দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক দায়ী। তিনি নিজেও ছাত্রীদের বিভিন্ন সময়ে বাজে কথা লিখে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ পাঠান।’

আরেক অভিভাবক বলেন, ‘আমার নাম প্রকাশ করতে পারবেন না। যেখানে শিক্ষক ছাত্রীকে হেনস্তা করে সেখানে লেখাপড়ার কি পরিবেশ থাকতে পারে? মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবেই বালিকা বিদ্যালয়ে দিয়েছি। এখন তো আতঙ্কে আছি।’

এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য প্রধান শিক্ষক সুজিতকে কল করা হলে তিনি সাংবাদিকদের গালমন্দ করেন বলে অভিযোগ করেছেন দৈনিক আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন।

শাহাদাত জানান, তাকে ও আরেক সাংবাদিক আশিকুর রহমানকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন প্রধান শিক্ষক। সেসব কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিংও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

শাহাদাত বলেন, ‘একটি তথ্য জানতে চাওয়া কি অপরাধ? তিনি যেভাবে আমাকে হুমকি ও গালাগালি করেছেন আমি নিজে এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একজন শিক্ষকের এমন আচরণের নিন্দা জানাই এবং তার শাস্তি দাবি করছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে শিক্ষক রথি কান্তকে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

প্রধান শিক্ষক সুজিত বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তার বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন সুজিত।

ডামুড্যা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন জানান, ঘটনাটি তার নজরে এসেছে। তদন্তের পর অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর