জেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মো. সোবহান মিয়া নামে এক কৃষককে আওয়ামী লীগ নেতা বানিয়ে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ২১ নভেম্বর রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় নাদিয়া আক্তার রিয়া নামে এক নারী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এ মামলায় মো. সোবহান মিয়া ও তার দুই ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বুধবার বিকালে মো. সোবহান মিয়া সন্তানদের নিয়ে এ ঘটনা থেকে রেহাই পেতে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে সোবহান মিয়া বলেন, আমি ২৫-৩০ বছর ধরে ঢাকা যাই না। ঢাকার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নাই। বাড়ির পাশের জমিতে আমি কৃষিকাজ করি। গ্রামের পাশে বাজারে আমার দুই ছেলে ব্যবসা করে। তাদের জন্য প্রতিদিন বাজারে খাবার নিয়ে যাই। আমি নাকি কারও পায়ের মধ্যে গুলি মারছি! ঢাকার এক মামলায় তারা আমার ও আমার দুই ছেলের নাম দিয়েছে।
জানা যায়, ৫ আগস্ট বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কালাম উল্লাহ্ নামে এক ব্যক্তি মিরপুর শপিং কমপ্লেক্সের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে ২১ নভেম্বর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাদিয়া আক্তার রিয়া মামলা করেন। এ মামলায় মো. সোবহান মিয়াকে ১৮নং আসামি করা হয়। মামলায় দেখানো হয়েছে সোবহান মিয়া নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. লতিফ হোসেন বলেন, চাতলপাড় ইউনিয়নে সোবহান মিয়া নামে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা নাই। চাতলপাড় ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেন অরুপ রায় চৌধুরী।
সোবহান মিয়ার মেয়ে উম্মে খাদিজা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাবার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমার পরিবারের সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। এখন শুনছি, আমার বাবা আর ভাইদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানোর মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সোবহান মিয়ার ছেলে ও মামলার আসামি জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, এই মামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটি চক্র জড়িত আছে। আমার চাচার সঙ্গে জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে আমাদের। এ ঘটনায় আমার চাচা রউফ মিয়া ও চাতলপাড় ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া এ মামলায় আমাদের নাম দিয়েছে।
মামলার বাদী নাদিয়া আক্তার রিয়াকে ফোন করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জানার পরই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট একেএম কামরুজ্জামান মামুন বলেন, এ ধরনের মিথ্যা মামলা হওয়াটা দুঃখজনক। একজন নিরপরাধ ব্যক্তিও যেন মিথ্যা মামলার শিকার না হয় এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।