,

কথিত ‘দানবীর মোরাদের’ বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের এক মাঠকর্মীকে অপহরণের পর আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে গ্রাহকদের নিকট থেকে উত্তোলিত ঋণের কিস্তির টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে গোপালগঞ্জের কথিত দানবীর মোরাদ শেখের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) আমলী আদালত মুকসুদপুরের বিচারক ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অমিত বিশ্বাসের আদালতে এ আদেশ দেন।

বিগত ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর ভিকটিম ও মামলার অভিযোগকারী মুকসুদপুর পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাঠকর্মী এবং কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া গ্রামের মো. ওলিয়ার রহমানের ছেলে আজাদুর রহমান কথিত দানবীর মোরাদ শেখের বিরুদ্ধে ওই আদালতে একটি নালিশী পিটিশন করেন।

মোরাদ শেখ গোপালগঞ্জ সদরের শুকতাইল কুঠিবাড়ী গ্রামের আকরাম আলী শেখের ছেলে।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর আমলী আদালত ওই নালিশী পিটিশনে বর্ণিত অভিযোগের সত্যতা ও অসত্যতা নিরুপন করে সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্টভাবে অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য গোপালগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করে। পরে একই বছরের ২৬ ডিসেম্বর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পিবিআই গোপালগঞ্জের উপ-পরিদর্শক হাসান সিকদারের ওপর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যাবতীয় তথ্য পর্যালোচনা, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, প্রাপ্ত সাক্ষ্য ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে মোরাদ শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পান তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর তিনি আদালতে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রদান করেন।

এরআগে আমলী আদালত পিটিশনে বর্ণিত অভিযোগের সত্যতা ও অসত্যতা নিরুপন করার জন্য অফিসার ইনচার্জ মুকসুদপুরকে নির্দেশ দেয়। সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া অভিযোগের তদন্ত করেন। তদন্ত কর্মকর্তা বাদীর অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।

প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জ সদরের শুকতাইল কুঠিবাড়ী গ্রামের মৎস্য ঘেরের মাটি উত্তোলনের জন্য স্কেবেটর ভাড়া করার মাধ্যমে মোরাদ শেখের সাথে অভিযোগকারী আজাদুর রহমানের পরিচয় হয়। আজাদুর রহমান চাকরির পাশাপাশি চুক্তিতে স্কেবেটর ভাড়া দেন। স্কেবেটরের ভাড়া বাবদ ২ লাখ টাকা বাকি পড়ে মোরাদ শেখের কাছে। অভিযোগকারী পাওনা টাকা আদায়ের জন্য মোরাদকে চাপ দিতে থাকেন। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে মোরাদ শেখ মুকসুদপুরে যান এবং বাদী আজাদকে ডেকে আনেন।

পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে আবারও মোরাদ শেখ মুকসুদপুরের উজানী বাজারে যান এবং টাকা দেয়ার কথা বলে বাদীকে সেখানে ডেকে নেন। সেখান থেকে কৌশলে মোটরসাইকেলে তুলে অস্ত্রের মুখে তাকে কুঠিবাড়ী এলাকায় তার মাছের ঘেরে নিয়ে আসেন। আজাদকে একটি ঘরের মধ্যে দু’দিন আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দার তার ওপর নির্যাতন চালায়। এছাড়া তার সঙ্গে থাকা ব্যাগের মধ্য থেকে ঋণ গ্রাহীতাদের দেওয়া কিস্তির ১০ লাখ ৭২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। মোরাদ শেখের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, অপহরণ, ছিনতাই, নারী নির্যাতন, অস্ত্র, মাদক ও ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর


Antalya korsan taksiAntalya korsan taksi