,

ওয়ারিশ পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তুলছেন ‘কথিত’ বোন!

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: ওয়ারিশ পরিচয়ে ‘কথিত’ বোন সেজে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতা তুলছেন মোসা. মুন্না বেগম নামে এক নারী।

এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামে।

ভাতা বন্ধ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন মো. লিয়াকত আলী নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ঘোনাপাড়া গ্রামের মৃত হাছেন আলী সরদারের ছেলে ইউনুস আলী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। ইউনুসের নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতা তাঁর একমাত্র ওয়ারিশ মাতা গোলজান খাতুন ভোগ করেন। এরই মধ্যে গোলজান খাতুন একই গ্রামের ধলাই খাঁ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সে সংসারে গোলজানের গর্ভে মুন্না নামে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সে সন্তান রেখে তিনি মারা যান। শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর আর কোন ওয়ারিশ জীবিত না থাকায় পরবর্তীতে ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এ সুযোগে মুন্না বেগম নিজেকে ইউনুস আলীর ওয়ারিশ (বোন) পরিচয় দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অসাধু চক্রকে ম্যানেজ করে নিজের নামে ভাতা চালু করেন। মোসা. মুন্না বেগমের জাতীয় পরিচয়পত্রে (৯১১৭৯২১০২১) পিতার নাম ধলাই খাঁ, গ্রাম-খলিশাখালী, ওয়ার্ড নং ৭, ভোটার নং-৩৫০৪৬৬৪৯৩৮২ লেখা রয়েছে। তবুও তিনি হাছেন আলী সরদারের মেয়ে পরিচয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা ভোগ করছেন।

অভিযোগকারী লিয়াকত আলী বলেন, ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর ভুয়া ওয়ারিশ পরিচয় দিয়ে মুন্না বেগম ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। কিন্তু ইউনুসের কোন ওয়ারিশ বেঁচে নেই। সে ভুল তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার টাকা তুলে খাচ্ছেন। তাই একে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

যুদ্ধাকালীন প্লাটুন কমান্ডার মো. আমিনুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘এভাবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করার কোন সুযোগ নেই। তবে যিনি তথ্য গোপন করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ওয়ারিশ পরিচয় দিয়ে ভাতা তুলেছেন, তিনি চরম অন্যায় করেছেন। ভাতা বন্ধ ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।’

এ বিষয়ে মোসা. মুন্না বেগমের সাথে কথা হলে তিনি শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর ওয়ারিশ হিসেবে ভাতা পাচ্ছেন দাবি করে বলেন, ‘আমি হাছেন আলী সরদারে মেয়ে। কিন্তু ছোট বেলা ধলাই খাঁকে বাবা বলে ডাকতাম। সেই হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলক্রমে পিতার নাম ধলাই খাঁ লেখা হয়েছে।’

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

-লিয়াকত হোসেন লিংকন

এই বিভাগের আরও খবর


Antalya korsan taksiAntalya korsan taksi