,

প্রভাবশালীদের দখলে কাশিয়ানীর ‘কুঠির খাল’

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: কাশিয়ানী উপজেলা সদরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি অবৈধভাবে দখল হয়ে গেছে। দিন দিন এ দখল প্রক্রিয়া যেন বেড়েই চলেছে।

খালের উভয়পাশে বসতবাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন স্থানীয়রা। এ খালটি দখল হয়ে যাওয়ায় উপজেলা শহরবাসী মারাত্মক বিপর্যয়ের আশংকা করছে।

জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনামলে বারাশিয়া নদীর কুঠিরঘাট এলাকা থেকে উত্থিত হয়ে কাশিয়ানীর পূর্বপাড়া ও পোনা গ্রামের মধ্যদিয়ে বিল পবনের বিলের সাথে মিলিত হয়েছে খালটি। যা কাশিয়ানী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের জন্য বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছিল। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা খাল দখল করে গড়ে তুলেছেন নানা অবৈধ স্থাপনা। ফলে এসব এলাকার পানি নিষ্কাশনের পথ চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে।

এদিকে, একই খালের ওপর দিয়ে কাশিয়ানী-টুঙ্গীপাড়া নবনির্মিত রেললাইন নির্মিত হয়েছে। কিন্তু নীচ দিয়ে কোন কালভার্টের ব্যবস্থা না থাকায় খালের পানি প্রবাহের পথও বন্ধ হয়ে গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুঠিরঘাট থেকে শুরু করে পোনা পর্যন্ত ওই এলাকার মেহেদী হাসান, আলী মুন্সী, মিজান প্রফেসর, মানিক কায়স্থ, ফিরোজ প্রফেসর, বিশ্ব ঠাকুর, ডা: কোবাদ ও তার জামাতা, আকবার সরদার, মেহেদী হাসানসহ স্থানীয় আরো অনেকে খাল দখল করে খালের মধ্যদিয়ে আড়াআড়ি বাড়িতে যাতায়াতের পাকা-কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করেছেন। কেউ বালু ফেলে, কেউ মাটি ফেলে, কেউ বহুতল ভবন গড়ে তুলেছে। আবার কেউ দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। এভাবে খালের পুরোটাই অবৈধ দখলদাররা জবরদখল করে রেখেছে। এ খালের যতদূর চোখ যায় শুধু অবৈধ স্থাপনা দেখা যায়। দেখে মনে হয় না যে, এখানে এক সময় খাল ছিল। অনেক স্থানে খালের কোন চিহ্নই নেই।

কাশিয়ানী সন্ধ্যা বাজারের ব্যবসায়ী মো. লিটন জানান, ‘খালটি স্থানীয়রা নানাভাবে দখল করে ভরাট করে ফেলেছে। ফলে বৃষ্টির পানি আটকে এ এলাকায় জলাবদ্ধতার আশংকা রয়েছে।’

পোনা এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব মোকলেছুর রহমান জানান, ‘এক সময় এ খাল দিয়ে ছোট ছোট নৌকা চলাচল করতে দেখেছি, কিন্তু এখন খালের কোন চিহ্ন নেই বললেই চলে।’

কাশিয়ানী পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক মো. ফায়েকুজ্জামান বলেন, ‘পানি নিষ্কাশন খালটি অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করা না গেলে কাশিয়ানী ও আশপাশের বেশ কিছু এলাকায় মারাত্মক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ভারি বর্ষণ হলে আশপাশ এলাকা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।’

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘অবৈধ দখলে থাকা খালগুলো অচিরেই দখলমুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে খালের মধ্যে থাকা অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর