,

পেসারদের নিয়ে আশার ছবি ডমিঙ্গোর

বিডিনিউজ ১০ ডটকম, খেলাধূলা:  ব্যাটসম্যানদের সিংহভাগই ছন্দে নেই। যদিও এই রানে না থাকাকে দীর্ঘ করোনা বিরতির ধকল বলেই মনে করেন রাসেল ডমিঙ্গো। একই সঙ্গে গর্ব করে বলার মতো উপাদান বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ থেকে খুঁজে পেয়েছেন বলেও দাবি বাংলাদেশ দলের হেড কোচের। গতকাল আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সেই উচ্ছ্বাসও গোপন করলেন না এ দক্ষিণ আফ্রিকান, ‘এই ওয়ানডে টুর্নামেন্ট থেকে যদি শুধু একটি ব্যাপারই বেছে নিতে বলা হয়, আমি নেব ফাস্ট বোলারদের পারফরম্যান্স।’

তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান থেকে শুরু করে খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদদের বোলিংয়ে তিনি কাঙ্ক্ষিত সেই ছবিটাই যেন দেখতে পাচ্ছেন, যেটি বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার দিন থেকেই দেখে আসছেন। বিশেষ করে দেশের বাইরে জেতার জন্য দারুণ এক পেস বোলিং আক্রমণ খুঁজে পাওয়ার আশায় দীর্ঘদিন ধরেই প্রাণপাত করে আসছে গোটা বাংলাদেশ। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে পেসারদের বোলিং যেন আশার সেই ছবিই দেখিয়েছে এই প্রোটিয়া কোচকে।

অন্য দলের দিকে তাকিয়ে ঈর্ষা করার দিন ফুরিয়ে আসার ক্ষণ গণনাও যেন শুরু করে দিয়েছেন ডমিঙ্গো, ‘দেখুন, প্রায় প্রতিটি আন্তর্জাতিক দলেরই একজন করে ফাস্ট বোলার আছে, যাকে কিনা উইকেটের দরকার হলে যখন-তখন ডাকা হয়। যেমন—ইংল্যান্ড জোফ্রা আর্চারকে ডাকে। দক্ষিণ আফ্রিকা আক্রমণে আনে রাবাদাকে। অস্ট্রেলিয়া বল দেয় মিচেল স্টার্ককে। ভারত শরণাপন্ন হয় বুমরাহর। এটি দেখা দারুণ ব্যাপার যে ম্যাচের ওরকম কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য আমাদেরও এখন এমন কয়েকজন বোলার আছে। আমরাও এমন কাউকে ডাকতে পারি, যে কিনা খুব জোরে বল করতে পারে। যেমন ধরুন তাসকিন ও খালেদের মতো কেউ, যারা কিনা বাউন্সে ব্যাটসম্যানকে ভড়কে দিয়ে এক-দুটি উইকেট তুলে নিতে পারবে। আমার জন্য সত্যিই ভীষণ সন্তুষ্টির ব্যাপার এটি।’

বিশেষ করে তাসকিনে মুগ্ধতা যেন একটু বেশিই ডমিঙ্গোর, ‘এখানে আসার পর থেকেই বলে আসছি, দেশের বাইরে লড়তে চাইলে এক ঝাঁক ফাস্ট বোলার গড়ে তুলতে হবে আমাদের। এখন আমি যা দেখছি, তাতে ভীষণ রোমাঞ্চিত। তাসকিনকেই দেখুন, কী বোলিংটা ও করছে!’ সেই সঙ্গে অন্যদের নামও অনুচ্চারিত থাকেনি, ‘অবশেষে আমরা এমন এক ঝাঁক ফাস্ট বোলার গড়ে তুলছি, যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে সক্ষম। ফিজ, রুবেল, আল-আমিন, হাসান মাহমুদ, খালেদ ও শরীফুলদেরও দেখুন। ছয় থেকে সাতজন ফাস্ট বোলার, যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করার ক্ষমতা রাখে। গত দুই সপ্তাহে সত্যিই ওদের দুর্দান্ত কিছু বোলিং আমরা দেখেছি।’

বোলার ধরে ধরে একেকজনের উন্নতির জায়গাটিও চিহ্নিত করেছেন ডমিঙ্গো, ‘তাসকিন ও রুবেলের এখনকার গড়ন দেখুন। খালেদের কথাও বলতে হয়। মাত্রই বড় চোট থেকে ফিরেছে। ওরা নিজেদের ফিটনেস নিয়ে অনেক খেটেছে। আমরা এখন ওদের স্কিলে উন্নতি নিয়ে কাজ করছি, যাতে ওরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারফরম করতে পারে।’ ঢাকায় ফেরার পর তাসকিনকে দেখে চমকে যাওয়া ডমিঙ্গো তরুণ এ পেসারের মধ্যে আরো অনেক পরিবর্তনও দেখেছেন, ‘তাসকিনের সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হলো ও নিজের ওয়ার্ক এথিকই বদলে ফেলেছে। আগের চেয়েও বেশি খাটছে। পরের স্পেলে ফিরে এসেও সে জোরেই বোলিং করছে। আমরা তো এমন বোলারই তৈরি করার চেষ্টা করছি, যার বোলিংয়ে গতির কোনো হেরফের হবে না। তা সে সকাল ১০টায়ই বোলিং করুক কি বিকেল ৫টায়!’

তবে লম্বা বিরতির পর ব্যাটসম্যানদের রান না পাওয়া নিয়ে সমালোচনাকে ‘সুবিচার’ বলে মনে হয় না ডমিঙ্গোর। এ অবস্থায় শ্রীলঙ্কা সফর স্থগিত হয়ে যাওয়াকেও ‘শাপে বর’ মানছেন না তিনি, ‘টেস্ট ক্রিকেটেই বরং দ্রুত ফর্মে ফেরা যায়। কারণ রান করার চাপ কম থাকে। সফর স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তাই ভালো হয়েছে বলব না। আর টেস্ট সিরিজ খেললে তো আমরা যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই খেলতাম।’

এই বিভাগের আরও খবর