,

পদ্মা রেল সংযোগের নকশা জটিলতার সমাধান হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: চার মাসেও সমাধান হয়নি পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের নকশা জটিলতার। চারটি পিলারের প্রয়োজনীয় উচ্চতা থাকলেও প্রশস্থতা না থাকায় সবশেষ ডিজাইনও ফিরিয়ে দিয়েছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ। এখন পিলার ভেঙে নতুন নকশা করছে রেল মন্ত্রণালয়। এ অবস্থায় মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের চিহ্নিত স্থানে কাজ বন্ধ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এতে বেড়ে যাবে রেল সংযোগ প্রকল্পের সময় ও খরচ।

আগস্টে রেল সংযোগ প্রকল্পের চারটি পিলার নিয়ে আপত্তি জানায় পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় ৫.৭ মিটার উচ্চতা ও রাস্তার প্রশস্থতা ১৫.৫ মিটার না থাকায় এ আপত্তি।

সেতু কর্তৃপক্ষের বিশেষজ্ঞরা সম্ভাব্য তিনটি সমাধান দেন। সেটি পর্যালোচনা করে রেল কর্তৃপক্ষ উচ্চতা ঠিক রেখে রাস্তার প্রশস্থতা ২ মিটার কমিয়ে আরেকটি নকশা দেন। কিন্ত সেটিও ফিরিয়ে দিয়েছে সেতু বিভাগ।

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, বিশেষ ড্রয়িং এক্সেপডেট নয়। আমাদের রিকোয়ারমেন্ট ফুলফিল হয়নি। কিছু পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

এরপর রেল কর্তৃপক্ষ বুয়েটের সহযোগিতায় বিশেষ নকশাও করে। কিন্ত তাতেও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী উচ্চতা ও প্রশস্থতা নিশ্চিত হয়নি। এখন পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাদের দেয়া পরামর্শগুলো মানলে উচ্চতা-প্রশস্থ সব কিছুই নিশ্চিত হতো।

পদ্মা সেতুর আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্যানেলের চেয়ারম্যান শামিমুজ্জামান বসুনিয়া বলেন, প্রতিটি পিলারের দুরত্ব ৩৮ মিটার করে করেছে রেল। আমি বলেছি সেতুতে ওঠার মুখের পিলারগুলোর কাছে তিনটি পিলারের দুরত্ব কমিয়ে ২৮.৫ মিটার করে করতে। তাতে তিনটির জায়গায় চারটি পিলার হবে, আর এতে মূল সড়ক পিলারের মাঝখানে আসবে। আর সেটি না হলে এই চিহ্নিত জায়গায় এসে ৫৫ মিটার দিতে হবে পিলারের দুরত্ব। শুধু গার্ডার আরেকটু মোটা হবে।

এ অবস্থায় রেল সংযোগ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আলোচিত চারটি পিলার সরিয়ে ফেলার চিন্তা করছে। তবে এতে একমত হতে হবে সেতু বিভাগ ও রেলের বিশেষজ্ঞদের।

রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ১৫.৫ মিটার স্পেস করে দিতে হলে আমাদের এখন খুটি দুটি সরিয়ে দেয়া লাগতে পারে। সেতু ও রেল বিভাগের প্যানেল অব এক্সাপার্টরা বসে যদি সিদ্ধান্ত দেন পিলার সরাতে হবে তাহলে সরানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কাজ চলমান, সরায়ে নিতে কোন ব্যতয়ের সুযোগ নেই, এডজাস্টেবল।

সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক এ প্রকল্পের জটিলতা চার মাসেও সমাধান না হওয়ায় উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে নকশা জটিলতায় সময় বাড়লে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের খরচ বেড়ে যাবে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ শামসুল ইসলাম বলেন, সমন্বয়হীনতার বহি:প্রকাশ এ প্রকল্প, এটাতে জাতি সাফার করে। সমস্যা সমাধানে একটা সমন্বয় টিম থাকা দরকার ছিল। তার উপর কনসালটেন্ট আছে। দুই প্রকল্পের বিদেশী এসব কনসালটেন্টরা একসাথে বসলেও তো সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্ত এটা যদি রেষারেষির পর্যায়ে চলে যায়, জানিনা, আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয়। কিন্ত এটা হওয়া উচিত না।

৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের জুনে।

এই বিভাগের আরও খবর