,

তৎপর আওয়ামী লীগ মাঠে নেই বিএনপি

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: পৌরসভা নির্বাচন সামনে রেখে সরগরম চট্টগ্রামের ১০ উপজেলা। প্রথম ধাপে সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও পর্যায়ক্রমে বাকি ৯টির তফসিল ঘোষণা করা হবে। এসব পৌরসভায় কারা মেয়র, কাউন্সিলর কিংবা সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী হচ্ছেন- তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে নানা বিশ্লেষণ চলছে। আর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেন্দ্রে ধরনা দিতে শুরু করেছেন।

পৌরসভাগুলোতে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তৎপরতা দেখা গেলেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা নেই। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নির্ভর করছে দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর। এখন পর্যন্ত পৌরসভা নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত কেন্দ্র থেকে আসেনি।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের ১৫ পৌরসভার মধ্যে নির্বাচন যোগ্য পৌরসভা রয়েছে ১০টি। এগুলো হল- সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, বারৈয়ারহাট, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বাঁশখালী ও সন্দ্বীপ। বাকি ৫টি পৌরসভার মধ্যে ফটিকছড়ির মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০২২ সালে। নাজিরহাট পৌরসভার মেয়াদপূর্ণ হবে ২০২৩ সালে।

২০১৯ সালে বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়াদপূর্ণ হলেও মামলার কারণে এখনও পর্যন্ত নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। ২০১২ সালে হাটহাজারী পৌরসভা গঠিত হলেও সীমানা নির্ধারণ নিয়ে মামলার কারণে নির্বাচন হচ্ছে না। এখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন।

নবগঠিত দোহাজারী পৌরসভা নির্বাচনের এখনও দিন-তারিখ ঠিক হয়নি। প্রথম ধাপে সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর এ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, সীতাকুণ্ড পৌরসভায় হালনাগাদ তালিকায় ভোটার রয়েছেন ৩৪ হাজার ৮১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৮২৭ জন। নারী ভোটার ১৬ হাজার ৯৮৬ জন। ৯টি ওয়ার্ডে ১৭টি কেন্দ্রের ১০০টি ভোট কক্ষে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সর্বশেষ এ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯৮ সালে ১ এপ্রিল ২৮ বর্গমাইল আয়তনের সীতাকুণ্ড পৌরসভা গঠিত হয়।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘সোমবার থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকেই মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে চিঠি দেয়া হয়েছে। এবারই প্রথম ইভিএমএর মাধ্যমে সীতাকুণ্ড পৌরসভার সবক’টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে।’

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘ধাপে ধাপে এ নির্বাচন হবে। প্রথম পর্যায়ে সীতাকুন্ড পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পর্যায়ক্রমে বাকী ৯টিতে নির্বাচন হবে।

এদিকে ১০ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে মনেনয়ন প্রত্যাশীরা সভা-সমাবেশ করছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রে লবিং-তদবির শুরু করেছেন।

পৌর নির্বাচন নিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, ‘পৌর নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিটি উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রস্তুতি শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগ বড় দল হওয়ায় এখানে এক পদে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী আছেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাকে প্রার্থী দেয়া হবে তিনিই নির্বাচন করবেন। বাকীরা দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে কাজ করবেন। দলীয় গাইডলাইন অনুযায়ী মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে।’

নির্বাচনের প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এমএ হালিম বলেন, নির্বাচন এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠ হবে কিনা তা নিয়ে ভোটারদের মতো বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও সন্দিহান। পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী দেবে কিনা এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দলীয় সিদ্ধান্তের আলোকে আমরা প্রস্তুতি নেব।

এই বিভাগের আরও খবর