,

কৃষকের কাজে আসছে না রাবারড্যাম

জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম: ১২ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি রৌমারী উপজেলার জিঞ্জিরাম নদীতে নির্মিত খেওয়ারচর রাবারড্যাম প্রকল্পটি। অবহেলা, অযত্ন ও বাঁধ নির্মাণের অভাবে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের এ প্রকল্পটি। দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে থাকায় ও দেখভালের অভাবে নষ্ট হতে বসেছে ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের রাবারড্যাম।

স্থানীয় ও কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তঘেঁষা খেওয়ারচর এলাকায় জিঞ্জিরাম নদীতে ২০১০ সালে খেওয়ারচর রাবারড্যাম প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। দু’দফায় এ প্রকল্পে ১৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়। প্রথম দফায় ১২ কোটি ও দ্বিতীয় দফায় অতিরিক্ত আরও ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয় হলেও সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন এলাকার কৃষক।

উপজেলার লালকুড়া খেয়াঘাট থেকে খেওয়ারচর রাবারড্যাম এলাকায় তিন কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। কাঁচা এ সড়কটির বেশিরভাগ এলাকা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রকল্পের সুরক্ষা ও নদীশাসনের জন্য ২ কিলোমিটার সিসি ব্লক ও রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ৮৫ মিটার সেতু। সেতুর দু’পাশের সিসি ব্লক নদীতে ধসে গেছে। সেতুর নিচে নদীতে ড্যামের রাবার ফুলানোর অভাবে রাবারড্যামের ব্যাগ নষ্ট হচ্ছে।

প্রকল্প এলাকার কৃষক আব্দুল মান্নান, লুৎফর রহমান, আনিছুর রহমান, নুরুল ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, প্রকল্পটি চালু না হওয়ায় বেশি দামে তেল কিনে কৃষকদের বোরো আবাদ করতে হচ্ছে। এতে লাভবান হয়েছে ঠিকাদার আর একটি স্বার্থান্বেষী মহল। অতিদ্রুত রাবারড্যামটি চালুর দাবি স্থানীয়দের।

রৌমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাহাদৎ হোসেন বলেন, রাবারড্যাম প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সেচ সুবিধার আওতায় আসবে ওই এলাকার আড়াই হাজার কৃষক পরিবারের ২ হাজার হেক্টর আবাদি জমি। নদীতে মাছ চাষে লাভবান হবেন এখানকার অনেক কৃষক। তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি চালু হলে এলাকায় অগভীর নলকূপের সংখ্যা কমে যাবে। এতে ভূমিকম্পের ঝুঁকিও অনেকটা কমে আসবে।

রৌমারী উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেজবাহ আলম বলেন, রাবার এলাকার নদীর দু’পাশে যে পরিমাণ বাঁধ নির্মাণ করা দরকার, তা না করায় প্রকল্পটি চালু করা যাচ্ছে না। বাঁধ নির্মাণ না করে রাবার ফুলিয়ে সেচ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কমপক্ষে ৭ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করলে এ প্রকল্পের সুফল পাবেন কৃষক। সেতুর দুই পাশের সিসি ব্লক ধসে যাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বন্যার সময় সিসি ব্লকের ক্ষতি হয়েছে। নতুন বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর