,

আরেকটি অসম প্রতিযোগিতায় মৌসুমী-মারিয়ারা

স্পোর্টস ডেস্ক, বিডিনিউজ ১০ ডটকম: বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল মানেই কিশোরীদের প্রাধান্য। সিনিয়র ফুটবলার নেই বললেই চলে। স্ট্রাইকার সাবিনা খাতুন ছাড়া বাকিরা অনুর্ধ্ব-১৮ এর মধ্যে। এ দলটিই কয়েকদিন আগে তাজিকিস্তানে খেলে এসেছে এএফসি অনুর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্ব।

একটু সিনিয়র পর্যায়ে গেলেই যে বাংলাদেশের মেয়েদের পারফরম্যান্সের পারদ যে নিচে নামতে থাকে তার প্রমাণ সদ্য শেষ হওয়া এএফসির টুর্নামেন্ট। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৭-০ আর চাইনিজ তাইপের কাছে ২-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে স্বাগতিক তাজিকিস্তানকে ৫-১ গোলে হারিয়ে সান্ত্ব্নার জয় নিয়ে ঘরে ফিরেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।

এএফসির এ টুর্নামেন্টে রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি টুর্নামেন্ট মেয়েদের সামনে। এবার আরো বড় আসর- অলিম্পিক গেমস ফুটবলের বাছাই। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকের মেয়েদের ফুটবলে এশিয়ান অঞ্চলের বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ড শুরু হচ্ছে রবিবার ‘এ’ গ্রুপের খেলা দিয়ে। বাংলাদেশ খেলবে ‘সি’ গ্রুপে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও মিয়ানমারকে নিয়ে এই গ্রুপের খেলা শুরু হবে ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে।

অলিম্পিক গেমসে পুরুষ ফুটবল দল অনুর্ধ্ব-২৩ হলেও মেয়েদের প্রতিযোগিতা জাতীয় দলের। চ্যালেঞ্জটা এ জন্যই বেশি বাংলাদেশের। কারণ, জাতীয় দল তৈরির মতো সিনিয়র খেলোয়াড় নেই বাংলাদেশে। একদল মেয়ে দিয়েই বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে খেলাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। যে কারণে, সিনিয়র টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে অসম প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে মেয়েদের। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দলগুলোর জালে গোল উৎসব করলেও বাংলাদেশের মেয়েরা বাস্তবতা টের পাচ্ছেন বড় টুর্নামেন্টে গিয়ে।

অলিম্পিক বাছাই খেলতে যাওয়ার আগে প্রস্তুতির বেশি সময়ও পাচ্ছেন না মেয়েরা। দুই দিন আগে তাজিকিস্তান থেকে ফিরে একটু বিশ্রামে থেকে শুক্রবার থেকে ২৪ ফুটবলার নিয়ে অনুশীলন শুরু হবে হবে। মিয়ানমার যাওয়ার আগে মেয়েরা অনুশীলনের সুযোগ পাচ্ছেন ৩ দিন। ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল যাবে মিয়ানমার। সেখানে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ৮ নভেম্বর স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে।

এশিয়ার ৪৭ দেশের মধ্যে ২৫ দেশ অংশ নিচ্ছে বাছাইয়ে। এর মধ্যে প্রথম রাউন্ডে অংশ নিচ্ছে ১৮ দেশ ৪ গ্রুপে ভাগ হয়ে। ফিফা মহিলা র্যাংকিং অনুযায়ী ভিয়েতনাম ও উজবেকিস্তান খেলবে সরাসরি দ্বিতীয় রাউন্ডে। র্যাংকিংয়ের আরো উপরের ৫ দেশ অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া, চীন ও থাইল্যান্ড সরাসরি খেলবে তৃতীয় রাউন্ডে।

প্রথম পর্বের প্রতি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল উঠবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। যে রাউন্ডে ১২ দল খেলবে ভিয়েতনাম ও উজবেকিস্তানসহ। ৩ গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলার পর গ্রুপ চ্যাম্পিয়নরা যোগ দেবে তৃতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া, চীন ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে।

অসম প্রতিযোগিতা হলেও এসব বড় আসরে খেলার প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে নারী ফুটবল দলের প্রধান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘এটা মেয়েদের জন্য অবশ্যই চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এ চ্যালেঞ্জ নিতেও হবে। সাবিনা খাতুন ছাড়া আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড় নেই। তারপরও সিনিয়র ও জাতীয় দলের টুর্নামেন্ট খেলে নিজেদের অবস্থান বুঝতে হবে। আমরা যদি এএফসি অনুর্ধ্ব-১৯ না খেলতাম তাহলে নিজেদের অবস্থান বুঝতাম না। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের গোলরক্ষক রূপনা চাকমা দুর্দান্ত খেলেছেন। চাইনিজ তাইপের কাছে হারলেও আমরা ভালো খেলেছি। দুই একটা ভুলের জন্য গোল খেয়েছি। আসলে আমাদের ধর্য্য ধরতে হবে।’

গ্রুপে ভারত ও নেপাল থাকায় ভরসা বেশি পাচ্ছেন সাবিনাদের কোচ ‘ভারত ও নেপালের বিরুদ্ধে অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমাদের মেয়েদের। মিয়ানমার শুধু আমাদের কাছে নতুন। আশা করি সমস্যা হবে না। আমাদের সিনিয়র টুর্নামেন্ট খেলতে হবে। না খেললে র্যাংকিংয়ে আরো পিছিয়ে পড়বো।’

অলিম্পিক বাছাইয়ে বাংলাদেশের সূচি
৮ নভেম্বর : বাংলাদেশ-মিয়ানমার
১১ নভেম্বর : বাংলাদেশ-ভারত
১৩ নভেম্বর : বাংলাদেশ-নেপাল

এই বিভাগের আরও খবর